6.6 C
London
December 19, 2024
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিকশীর্ষ খবর

সমৃদ্ধি বাড়াতে পারে উন্নত অভিবাসন নীতিঃ বিশ্বব্যাংক

বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব জনসংখ্যায় বার্ধক্যের হার আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত বাড়ছে৷ যা অনেক দেশকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি উন্নতির জন্য অভিবাসনের ওপর নির্ভরশীল করে তুলছে।

২৫ এপ্রিল, বিশ্ব উন্নয়ন প্রতিবেদন ২০২৩ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভিবাসী এবং শরণার্থীদের এবং অভিবাসনকে আরও ভালোভাবে কাজ লাগানোর একটি অনন্য সুযোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ধনী দেশগুলোর পাশাপাশি মধ্যম আয়ের যে দেশগুলো ঐতিহাসিকভাবে অভিবাসীদের ওপর নির্ভরশীল, সেসব দেশগুলোতে অবসরে যাওয়া নাগরিকদের সংখ্যা বাড়ছে৷ যার কারণে দক্ষ কর্মী পেতে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে।

 

 

 

 

অপরদিকে, বেশিরভাগ নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জনসংখ্যা দ্রুত বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। যা সেসব দেশের তরুণদের জন্য আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে চাপের মধ্যে ফেলেছে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, “অভিবাসন সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। যখন এটি সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, তখন এটি মূল দেশ এবং গন্তব্য দেশ সবার জন্য সুবিধা নিয়ে আসে।”

আগামী কয়েক দশকে অনেক দেশে কর্মক্ষম প্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাবে। ২১০০ সালের মধ্যে স্পেনের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি কর্মক্ষম জনসংখ্যা সংকুচিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ৬৫ বছরের বেশি বয়সি জনসংখ্যার হার ২০ শতাংশ থেকে ৩৯ শতাংশে উন্নীত হবে৷

 

 

 

 

মেক্সিকো, থাইল্যান্ড, টিউনিশিয়া এবং তুরস্কের মতো দেশগুলোতে শিগগিরই আরও বিদেশি শ্রমিকের প্রয়োজন হতে পারে৷ কারণ, তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সন্তোষজনক নয়।

জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের বাইরে, অভিবাসন চালনাকারী শক্তিগুলিও দিন দিন পরিবর্তিত হচ্ছে। যা আন্তঃসীমান্ত রাজনীতি ও ব্যবস্থাকে আরও বৈচিত্র্যময় এবং জটিল করে তুলছে। মেক্সিকো, নাইজেরিয়া এবং যুক্তরাজ্যের মতো অনেক দেশে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো এবং গ্রহণ করা নিয়ে মূল দেশ ও গন্তব্য দেশগুলোর মধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে।

গত এক দশকে বিশ্বে শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনও অভিবাসনের জন্য হুমকিস্বরূপ। জলবায়ু সমস্যা জনিত দেশগুলোতে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বসবাস করে।

বিশ্বের বর্তমান অভিবাসন নীতি অভিবাসনের সম্ভাব্য উন্নয়ন থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে ব্যর্থ। উল্টো এসব নীতি দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জন্য বড় দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

 

 

 

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ অর্থাৎ ১৮ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বর্তমানে নিজ দেশের বাইরে বসবাস করছেন। এছাড়া তিন কোটি ৭০ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হিসেবে বিশ্বের নানা প্রান্তে অবস্থান করছেন। এসব ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ মানুষ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বসবাস করছেন।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনটিতে অভিবাসনকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, নীতিনির্ধারকদের লক্ষ্য হওয়া উচিত গন্তব্য সমাজের চাহিদার সঙ্গে অভিবাসীদের দক্ষতার মিলকে শক্তিশালী করা, উদ্বাস্তুদের রক্ষা করা এবং দুর্দশাগ্রস্ত সমস্যার হার হ্রাস করা। নীতিনির্ধারকরা কীভাবে এটি করবেন সেটি নিয়ে প্রতিবেদনে একটি কাঠামো দেয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং উন্নয়ন অর্থনীতির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইনদারমিট গিল বলেন, “বিশ্ব উন্নয়ন প্রতিবেদনটি অভিবাসন এবং শরণার্থী নীতি তৈরিতে সহায়তার জন্য একটি সহজ এবং শক্তিশালী কাঠামোর প্রস্তাব করেছে। গন্তব্য, ট্রানজিট এবং মূল দেশগুলোর বহুমুখী ব্যবহারকে সামনে রেখে এটি তৈরি করা হয়েছে।”

 

 

 

 

অভিবাসীদের মূল দেশগুলোর উচিত শ্রম অভিবাসনকে তাদের উন্নয়ন কৌশলের একটি সুস্পষ্ট অংশ করা। তাদের উচিত রেমিট্যান্স খরচ কমানো এবং প্রবাসীদের কাছ থেকে থেকে তথ্য ও অর্থ স্থানান্তর সহজতর করা। বিশ্বব্যাপী উচ্চ চাহিদা রয়েছে এমন দক্ষতার দিকেও মনোযোগ দেয়া উচিত, যাতে নাগরিকেরা অভিবাসনের পর আরও ভালো চাকরি পেতে পারে।

বিশ্ব ব্যাংকের মতে, যেসব দেশে অভিবাসীদের দক্ষতার উচ্চ চাহিদা রয়েছে তাদের উচিত অভিবাসনকে উৎসাহিত করা, মূল সমাজে অন্তর্ভুক্তি সহজতর করা এবং তাদের নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টিকারী সামাজিক প্রভাবগুলোকে মোকাবিলা করা।

প্রতিবেদনে অভিবাসনকে উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য বলে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা গন্তব্য সমাজের চাহিদার সঙ্গে অভিবাসীদের দক্ষতার মিলকে শক্তিশালী করতে পারে।

 

আরো পড়ুন

করোনা ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে ইউরোপ-এশিয়ায় নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা

বাবা দিবসে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে গাইবেন গৌরি চৌধুরী

অনলাইন ডেস্ক

দূরবর্তী অঞ্চলের জন্য ড্রোন বহর ব্যবহার করবে রয়্যাল মেইল

অনলাইন ডেস্ক