22.1 C
London
July 27, 2024
TV3 BANGLA
শীর্ষ খবরসিলেট

সিলেটে পরিবহন মালিক-শ্রমিকের চাপে বন্ধ বিআরটিসি বাস সার্ভিস

উদ্বোধনের ৫ দিনের মাথায় বন্ধ হলো সিলেট-হবিগঞ্জ সড়কে বিআরটিসি বাস সার্ভিস।  রোববার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ওই সড়কে বিআরটিসি বাস চলতে দেননি বাস পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তারা একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো এবং চালক-হেলপারকে মারধর করে গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছেন, এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, রোববার সকাল ৯টায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে একটি বাস ছেড়ে আসার কথা থাকলেও শ্রমিকদের হুমকির মুখে বন্ধ রাখা হয়। এরপর হবিগঞ্জ থেকে আরেকটি বাস ছাড়ার চেষ্টা করলে শ্রমিকরা চালক-হেলপারকে মারধর ও গাড়ির পেছনের গ্লাস ভাঙচুর করে। পরে যাত্রী ছাড়াই দুই বাস ফেরত আনা হয়।

 

বিআরটিসি বাস সার্ভিস সিলেট ডিপো ব্যবস্থাপক জুলফিকার আলী বলেন, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ থেকে দু’টি বাস চলতে গেলে শ্রমিকরা পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপরও্ খালি বাসগুলো নিয়ে আসার পথে চালক-হেলপারকে মারধর করা হয় এবং গাড়ির পেছনের গ্লাস ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

তিনি বলেন, যেখানে সেতুমন্ত্রী ওই দু’টি সড়কে বিআরটিসি বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ছিল বাস সার্ভিস চালুতে। সারা বাংলাদেশে ২২টি ডিপোতে ৫৭০টি বাসের মধ্যে সিলেট ডিপোতে সর্বনিম্ন ৩০ নতুন বাস নামানোর কথা ছিল। সেখানে এ দু’টি সড়কে পর্যায়ক্রমে ১২টি বাস নামানোর কথা। কিন্তু ২টি বাস চালু করেই মালিক-শ্রমিকদের তোপের মুখে বন্ধ করতে হচ্ছে। অথচ মন্ত্রী মহোদয় বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেছেন।

 

সিলেট বিভাগীয় বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল কবীর পলাশ বলেন, আমরা দেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিবহন সেবা দিয়ে আসছি। কিন্তু বিআরটিসি বাস চালুর আগে কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে বসেনি।

 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন কি না, তাই আমাদের জানা নেই। আমরা মনে করি, এটা তারা চালাকি করছে। তবে গাড়ি ভাঙচুরের কথা অস্বীকার করেন তিনি।

 

সিলেট বাস, মিনিবাস, কোচ পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন কমিশনার ও কার্যকরী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. গোলাম হাফিজ লোহিত বলেন, সিলেট থেকে আন্তঃজেলা বিআরটিসি বাস চলাচলে শ্রমিকরা বাধা দিচ্ছে না। মূলত বিভাগীয় সড়ক ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এরমধ্যে সিএনজি অটোরিকশায় লোকাল বাস সার্ভিসের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। তার উপর আবার বিআরটিসি বাস চলবে, তাতে বাস মালিক শ্রমিকরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন। তাছাড়া নানাভাবে সৃষ্ট জটিলতার মধ্যেও আলোচনা না করেই বিআরটিসি বাস নামানোর নেপথ্যেও ঠিকাদাররা জড়িত আছেন বলে মনে করেন তিনি।

 

গত মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভিডিও কনফারেন্সে সিলেট-শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জ রুটে বিআরটিসি বাস সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

 

এ দুই সড়কে বাস সার্ভিস চালু হওয়ার পেছনে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনেরও। উদ্বোধনের পর আবেগাপ্লুত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাতে ভুলেননি। কিন্তু উদ্বোধনের ৫ দিনের মাথায় বন্ধ হলো বাস সার্ভিস।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিআরটিসি সিলেট ডিপোতে ৩০টি নতুন বাস রয়েছে। এরমধ্যে সুনামগঞ্জ রুটে ৪টি, সিলেট ভোলাগঞ্জ সড়কে একটি এবং সম্প্রতি নতুন করে সিলেট-শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জ সড়কে প্রথম অবস্থায় দু’টি বাস নামানো হয়। পর্যায়ক্রমে ১২টি বাস নামানোর কথা ছিল। বাসগুলো সিলেটের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল কদমতলী থেকে দুইরুটে প্রতিদিন চলাচল কথা ছিল।

 

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাসগুলোতে সিলেট-মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল রুটের ভাড়া যথাক্রমে ২৩৫ টাকা (শ্রীমঙ্গল) ও ১৮০ টাকা (মৌলভীবাজার) এবং সিলেট-হবিগঞ্জ রুটের এসি গাড়ির ভাড়া ২৭৭ টাকা। তবে শীতকালীন সিলেট-হবিগঞ্জ রুটের এসি বাসের ভাড়া নেয়া হবে ১৮০ টাকা ও মৌলভীবাজারে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা ও শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত নেয়ার পরিকল্পনা ছিল বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের।

 

২৭ ডিসেম্বর ২০২০
সূত্র: বাংলানিউজ

আরো পড়ুন

আগামী ৫০ বছরে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরো জোরদার হবে

ফের বাবা হতে চলেছেন বরিস জনসন

লিবিয়া উপকূলে বাংলাদেশিসহ ৬৫ অভিবাসনপ্রত্যাশী উদ্ধার