6.9 C
London
March 28, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

সোনালী ব্যাংক ইউকের টিকে থাকা নিয়ে শঙ্কা

যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থার জরিমানা আরোপ, একাধিক শাখা বন্ধ করে দেওয়া, লোকসান ও অনিয়মের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে লন্ডনের সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম। ফলে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনাকারী সোনালী ব্যাংক ইউকের টিকে থাকা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানায় প্রথম আলো।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকটি এখন অথরাইজড পেমেন্ট ইনস্টিটিউট (এপিআই) হিসেবে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। এ জন্য যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথরিটির (এফসিএ) কাছে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলে এই লাইসেন্স দিয়ে রেমিট্যান্স হাউস হিসেবে টিকে থাকবে সোনালীর লন্ডন কার্যক্রম।

 

এদিকে অস্তিত্বসংকটে পড়ায় রিজার্ভ থেকে সোনালী ব্যাংককে দেওয়া ৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার (৩৯৬ কোটি টাকা) ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ, সোনালী ব্যাংক ওই অর্থ নিয়ে ব্যবসার জন্য সোনালী ব্যাংক ইউকে লিমিটেডকে দিয়েছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এখনই এই অর্থ ফেরত দেওয়া সম্ভব নয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়েছে সোনালী ব্যাংক। কারণ, এতে এপিআই লাইসেন্স পেতে বাধা তৈরি হতে পারে।

 

সোনালী ব্যাংক ইউকের এই পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে চাননি এটির মালিকানার সঙ্গে যুক্ত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান। এর আগে তিনি লন্ডন সোনালী ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ছিলেন। এ বিষয়ে কথা বলতে আইনি নিষেধাজ্ঞা আছে বলে জানিয়েছেন সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী। তিনি সোনালী ব্যাংক ইউকের পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন পরিচালক হিসেবে। আর সোনালী ব্যাংক ইউকের চেয়ারম্যান ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাবেক সচিব আসাদুল ইসলামও এ নিয়ে কথা বলতে চাননি।

 

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ব্যাংকটির লাইসেন্স যেকোনো সময় অকার্যকর হয়ে যেতে পারে, এমন তথ্য আমরা জেনেছি। তবে এ জন্য সময় দেওয়া হয়েছে।

 

নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৩ সালের ২ জুন সোনালী ব্যাংক ইউকের ওল্ডহ্যাম শাখা থেকে সুইফট কোড জালিয়াতির মাধ্যমে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার হাতিয়ে নেওয়া হয়। যুক্তরাজ্যের ওল্ডহ্যাম শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ইকবাল আহমেদ ব্যাংকের ভল্ট থেকে অর্থ চুরি, গ্রাহকের হিসাব থেকে অবৈধভাবে অর্থ উত্তোলন ও গ্রাহকের অর্থ হাতিয়ে নেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর শাখাটি বন্ধ করে দেয় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১৭ সাল থেকে চালু আছে শুধু লন্ডন ও বার্মিংহাম শাখা।

 

এদিকে ২০১০ সালের ২০ আগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ২১ জুলাই সময়ে অর্থ পাচার প্রতিরোধব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে সোনালী ব্যাংক ইউকে লিমিটেডকে ৩২ লাখ পাউন্ড জরিমানা করে দেশটির আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথরিটি (এফসিএ)। বন্ধ করে দেয় নতুন হিসাব খোলা। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংক ইউকের মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান স্টিভেন স্মিথকে এ ধরনের চাকরিতে নিষিদ্ধ ও ১৮ হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হয়। এ সময় ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন খোন্দকার মো. ইকবাল ও আতাউর রহমান প্রধান। তাঁরা দুজনই পদোন্নতি পেয়ে পরে বেসিক ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হয়েছেন।

 

সোনালী ইউকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে কর–পূর্ববর্তী লোকসান ছিল ২ লাখ ৯৬ হাজার পাউন্ড, ২০১৭ সালে যা কমে হয় ১ লাখ ২৫ হাজার পাউন্ড। তবে ২০১৮ সাল থেকে মুনাফায় ফেরে। ওই বছর কর–পূর্ববর্তী মুনাফা হয় ৬৮ হাজার ৯৭৩ পাউন্ড। তবে ২০২১ সালে আবার লোকসানে চলে যায়। গত বছর লোকসান হয় ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৯৯০ পাউন্ড।

 

১১ মে ২০২২
এনএইচ

আরো পড়ুন

৩ লাখ ১২ হাজার পাউন্ড স্ট্যাম্প ডিউটি বাঁচিয়েছেন টনি ব্লেয়ার

জাতীয় সরকারে যাদের নাম প্রস্তাব করলেন ডা. জাফরুল্লাহ

রানির চেয়ে বেশি সম্পদের মালিক রাজা চার্লস