গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর পেরিয়ে গেছে পাঁচ মাসের বেশি সময়। এই সময়ে অঞ্চলটিতে বিপুল পরিমাণ বোমা ফেলেছে ইসরায়েল, বন্ধ করে দিয়েছে খাদ্যের প্রবেশ। এই অবস্থায় অঞ্চলটিতে নেই চিকিৎসা সুবিধাও। সব মিলিয়ে এক নারকীয় জীবন যাপন করছে ২৪ লাখ গাজাবাসী। তাদের এই যন্ত্রণার আগুনে ঘি ঢালছে অস্বাভাবিক আকারে জন্ম নেওয়া নবজাতকেরা।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) ফিলিস্তিনে নিযুক্ত দূত ডমিনিক অ্যালেন গতকাল শুক্রবার এই ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে যে চিত্র দেখা গেছে, তা কেবল ‘দুঃস্বপ্নের’ সঙ্গেই তুলনীয়।
ডমিনিক অ্যালেন আরও জানিয়েছেন, গাজার হাসপাতালগুলোয় যেসব শিশু জন্ম নিচ্ছে, তারা আকারে অনেক ছোট এবং খুবই দুর্বল অবস্থায় জন্ম নিচ্ছে। আর মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশন করা হচ্ছে পর্যাপ্ত অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই।
ইউএনএফপিএর এই কর্মকর্তা সংস্থাটির অধিবেশনে জেরুসালেম থেকে ভিডিও কলে যুক্ত হয়ে বলেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে এ সপ্তাহে গাজার ১০ লাখ নারী ও কিশোরীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে গাজা ছেড়ে চলে যাচ্ছি এবং বিশেষ করে প্রতিদিন গড়ে যে ১৮০ জন নারী সন্তান জন্ম দিচ্ছেন, তাদের জন্যও আমি আতঙ্কিত।’
গাজার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে ডমিনিক অ্যালেন বলেন, ‘চিকিৎসকেরা বলছেন, তারা আর স্বাভাবিক আকারের কোনো শিশুর জন্ম দেখছেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা নিয়মিতই যা দেখছেন, দুঃখজনকভাবে তা হলো—আরও বেশি বেশি মৃত শিশুর জন্ম এবং আরও বেশি নবজাতকের মৃত্যু। যেগুলো অপুষ্টি, পানিশূন্যতা ও অন্যান্য জটিলতার কারণে ঘটছে।’
এ সময় তিনি গাজায় আরও বেশি বেশি স্বাস্থ্যসেবা উপকরণ ও রসদ পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সেই সব শিশুর থাকার কথা তাদের মায়েদের কোলে, মৃতদের জন্য নির্ধারিত কোনো বডি ব্যাগে তাদের থাকার কথা নয়।’
সূত্রঃ ইউএনএফপিএ
এম.কে
১৭ মার্চ ২০২৪