8.6 C
London
November 18, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

২২ কৃষি পণ্যে শীর্ষ দশে বাংলাদেশ

আয়তনে বিশ্বে ৯৪তম দেশ হলেও বাংলাদেশ ফসল উৎপাদনে এগিয়ে। উৎপাদন বাড়ায় আমদানি কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ ২২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে চাল, মসুর ডাল, আলু, পেঁয়াজ, চায়ের মতো পণ্য যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফল। গত এক দশকে কুমড়া, ফুলকপি ও সমজাতীয় সবজির মতো কিছু পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ শীর্ষ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দেশভিত্তিক কৃষিপণ্য উৎপাদনের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে চিত্রটি দেখা যায়। সংস্থাটি গত মার্চে এই পরিসংখ্যান হালনাগাদ করে। এতে তথ্য দেওয়া হয় ২০২১ সালের।

 

 

 

 

বাংলাদেশ আয়তনের দিক দিয়ে বিশ্বের ৯৪তম দেশ। তবে এফএওর হিসাবে দেখা যায়, প্রাথমিক কৃষিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৪তম। শীর্ষে রয়েছে চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, আয়তনে ছোট হলেও কৃষিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ ভালো।

এফএওর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের মূল্য ছিল ৩ হাজার ৬১১ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় চার লাখ কোটি টাকার সমান। উৎপাদনের পরিমাণ ৯ কোটি ৩৩ লাখ টন।

এফএও মোট ১৬২টি প্রাথমিক কৃষিপণ্য উৎপাদনের হিসাব দিয়েছে। বাংলাদেশ ৬৮ ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদনের তালিকায় রয়েছে। এ তালিকায় যেমন একক পণ্য আছে, তেমনি সমজাতীয় ও মৌসুমভিত্তিক কয়েকটি পণ্য মিলিয়ে একটি শ্রেণি হিসেবে দেখানো হয়েছে।

 

 

 

 

এফএওর হিসাবে, ২০০১ সালে ১১টি পণ্য উৎপাদনে শীর্ষ দশে ছিল বাংলাদেশ। ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭টিতে। এরপর বিভিন্ন বছরে যোগ হয় আরও পাঁচটি কৃষিপণ্য—পেঁয়াজ, কুমড়া, ফুলকপি ও ব্রকলি, পাখির খাদ্য বা বীজ এবং অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত শিমের বিচি। সব মিলিয়ে ২০২১ সালে ২২টি পণ্য উৎপাদনে শীর্ষ তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ কোনো পণ্য উৎপাদনে প্রথম নয়। তবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাট, সুপারি ও শুকনা মরিচ উৎপাদনে। চাল, রসুন এবং অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত চিনিজাতীয় ফসলে বাংলাদেশ তৃতীয়। জাম, বরই, করমচা, লটকন ইত্যাদি বেরিজাতীয় ফল এবং অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত সুগন্ধি মসলায় চতুর্থ। মসুর ডাল ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি উৎপাদনে বাংলাদেশ ষষ্ঠ। সপ্তম অবস্থানে রয়েছে পেঁয়াজ, আলু, আদা, বেগুন, শিমের বিচি ও নারকেলের ছোবড়া উৎপাদনে। চা ও কুমড়ায় বাংলাদেশ অষ্টম। আম, পেয়ারা ও গাবজাতীয় ফল, ফুলকপি ও ব্রকলি এবং মটরশুঁটি ও পাখির খাদ্য বা বীজ শ্রেণিতে বাংলাদেশের অবস্থান নবম।

 

 

 

 

প্রধান কিছু ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশের অগ্রগতি বেশ ভালো। যেমন আলু। দুই দশক আগে আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ ছিল ২০তম দেশ। এরপর কানাডা, তুরস্ক, পোল্যান্ডের মতো ১৩টি দেশকে একে একে পেছনে ফেলে ৭ নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এফএওর তথ্য বলছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে আলু উৎপাদিত হয়েছে ৯৮ লাখ টন।

মরিচ (শুকনা) উৎপাদনে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। এক দশকে চীন ও থাইল্যান্ডকে পেছনে ফেলে মরিচ উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠেছে বাংলাদেশ।

চাল বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য। চার দশকের বেশি সময় ধরে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ ছিল চতুর্থ অবস্থানে। ২০২০ সালে ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে তৃতীয় অবস্থানে ওঠে বাংলাদেশ। শীর্ষে রয়েছে চীন ও ভারত।

স্বাধীনতার পর মসুর ডালের উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ দশে ছিল। পরে বাংলাদেশ পিছিয়ে যায়। অবশ্য এখন যুক্তরাষ্ট্র, ইথিওপিয়া, রাশিয়া ও চীনকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ষষ্ঠ অবস্থানে উঠেছে।

কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে প্রায় ১১৩ কোটি মার্কিন ডলার। সবজি, শুকনা খাবার, মসলা, সুগন্ধি চাল ইত্যাদি কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১১৬ কোটি ডলারের বেশি।

এম.কে
১০ জুন ২০২৩

আরো পড়ুন

বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা বন্ধ করে দিল আরব আমিরাত

বাংলাদেশ থেকে কনস্যুলার অফিস গুটিয়ে নিয়েছে রোমানিয়া

এবার সরকারের কাছে ৬৩ কোটি ডলার সুদ চাইল রাশিয়া