আর্থিক কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিম নিবন্ধিত হয়ে হজ পালন করতে পারেন না। এই তথ্য উঠে আসে সিএনএনের এক রিপোর্টে। বিশেষ করে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় মিশর থেকে মক্কায় হজে যেতে কি ধরনের সমস্যায় পড়েন দরিদ্র মুসলিম পরিবারগুলো। অফিশিয়াল নিবন্ধন করে হজ পালন করতে হলে যে অর্থের প্রয়োজন হয় তা মেটাতে হিমসিম খায় অনেক দেশের মুসলিম। এর অন্যতম কারণ সৌদি সরকারের নিবন্ধন ফি’স বৃদ্ধি।
মিশরের ৮১ বছর বয়সী আবদেলজার আবদো সালেম তার কনিষ্ঠ পুত্র মাহমুদকে দু’বছর আগে বিয়ে দেয়ার পর হজব্রত পালনের নিয়ত করেন বলে সিএনএনের বরাতে জানা যায়। কিন্তু মিশন পূরণের জন্য সরকারী চ্যানেলগুলির মাধ্যমে তাকে প্রায় ৩,১০০ ডলার জমা দেয়ার প্রয়োজন হয়। পরবর্তীতে সেলাম ২,১০০ ডলারের বিনিময়ে হজের জন্য একটি লাইসেন্সবিহীন সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে হজযাত্রা করেন।
তবে সালেম ২০২৪ সালে হজব্রত পালন করে দেশে ফেরত যেতে পারেন নাই। সৌদি আরবের তাপমাত্রা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছানোর কারণে এই বছরের হজে মারা যাওয়া ১,৩০০ এরও বেশি হজযাত্রীর মধ্যে সালেমও ছিলেন।
হজের সময়ে হিট ওয়েভে মারা যাওয়ায় সালেমের কন্যা বলেন, ‘আমরা খুশি যে আমার বাবাকে মক্কায় সমাহিত করা হয়েছে। আমার বাবার স্বপ্ন ছিল তিনি হজ পালন করবেন। অবশেষে তার আশা পূর্ণ হয়েছে এবং তিনি এখানেই ঘুমাবেন।’
গরমের কারণে এই বছরে যে ট্র্যাজেডি হয়েছে তাতে হাজারেরও বেশি হজযাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যারা মারা গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই “পর্যাপ্ত আশ্রয় বা স্বাচ্ছন্দ্য ছাড়াই সরাসরি সূর্যের আলোতে দীর্ঘ দূরত্বে হেঁটেছিলেন”। তাপমাত্রা রেকর্ডেমাত্রায় পৌঁছেছিল প্রায় ১২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায়, অনিবন্ধিত হয়ে গোপনে যারা হজ পালন করতে এসেছিলেন তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত থাকতে হয়। অনেক পথ হাঁটতে হয় যা তাদের মৃত্যু ত্বরান্বিত করে।
উল্লেখ্য যে, প্রতি বছর সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের জন্য মক্কায় আইনী প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য লাইসেন্স প্রদান করে। এই লাইসেন্স প্রাপ্ত সংস্থাগুলো হাজীদের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহন এবং আবাসন সুবিধার ব্যবস্থা করে।
প্রতিটি দেশকে লাইসেন্স বরাদ্দ করা হয় যা এর মুসলিম জনগোষ্ঠীর সাথে সমানুপাতিক। এই প্রক্রিয়াটির বাইরে থেকে যারা অনিবন্ধিত উপায়ে হজ পালন করতে আসে তাদের জন্য জরিমানার ঘোষণাও দিয়েছিল সৌদি কর্তৃপক্ষ।
সূত্রঃ সিএনএন
এম.কে
২৭ জুন ২০২৪