যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের ইউরোপপন্থী নতুন কূটনৈতিক কৌশলের ফল হিসেবে ফরাসি পুলিশ প্রথমবারের মতো অভিবাসীবাহী ডিঙি নৌকায় ছুরি চালিয়ে তা ছিদ্র করেছে বলে দাবি করেছে ডাউনিং স্ট্রিট। ব্রিটিশ সরকারের মতে, এই পদক্ষেপ মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি “গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত” এবং “বড় ধরনের প্রভাব” ফেলতে পারে।
সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, “সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমরা ফরাসি আইনপ্রয়োগকারী বাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গিতে একটি দৃঢ়তা দেখতে পাচ্ছি। অগভীর পানিতে গিয়ে তারা যেভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার জানান, তিনি ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন এবং আইন পরিবর্তনের বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। তবে কিছু মানবাধিকার সংগঠন এবং স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা দাবি করেছেন, এটি নতুন কোনো কৌশল নয়, বরং আগেও কালে ও আশেপাশের অঞ্চলে এমন ঘটনা ঘটেছে।
প্রজেক্ট প্লে-এর কেট ও’নেইল বলেন, “নৌকা ছিদ্র করার এই পদ্ধতি নতুন কিছু নয়। বরং এটি শিশুদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ তারা প্রায়ই নৌকার মাঝখানে অবস্থান করে।”
ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ফরাসি সরকারের সঙ্গে এই মাত্রার সহযোগিতা এর আগে আর কোনো ব্রিটিশ সরকার করতে পারেনি। এটি ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের একটি বড় অর্জন হিসেবেই দেখছে সরকার।
তবে সব চেষ্টা সত্ত্বেও অভিবাসী প্রবাহ কমছে না। ২০২৫ সালের এই পর্যন্ত ২০,৬০০ জন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৫২ শতাংশ বেশি। সরকারও স্বীকার করেছে যে সংখ্যাটা “কমতেই হবে”, কিন্তু আগামী এক বছরে তা আদৌ কমবে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কুপার জানান, অভিবাসন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো, প্রতিটি নৌকায় অতিরিক্ত মানুষ তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, “যেসব নৌকায় শিশু মারা যাচ্ছে, সেই সব নৌকার যাত্রীদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।”
সরকার ইতোমধ্যে নতুন আইন প্রস্তাব করেছে যার অধীনে ‘সমুদ্রে জীবন বিপন্ন করা’ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি এখন সংসদে থাকা বর্ডার সিকিউরিটি, অ্যাসাইলাম অ্যান্ড ইমিগ্রেশন বিল-এর অন্তর্ভুক্ত।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস
এম.কে
০৬ জুলাই ২০২৫