বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। মার্কিন সরকারের অচলাবস্থা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদে অর্থ স্থানান্তর করছেন, যার প্রভাব পড়েছে সোনার বাজারে। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো স্বর্ণের ফিউচার মূল্য আউন্সপ্রতি ৪,০০০ ডলারের সীমা অতিক্রম করে ৪,০০৩ ডলারে দাঁড়ায়। একই সময়ে স্পট গোল্ডের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৯৬০.৬০ ডলার প্রতি ট্রয় আউন্সে, যা মূল্যবান ধাতু পরিমাপের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত নিরাপদ সম্পদের দিকে ঝোঁকে, ফলে স্বর্ণের বিক্রি দ্রুত বাড়ে। গত এক বছরে স্বর্ণ ও রূপার মতো ধাতুর দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও বাণিজ্যিক চাপ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের স্বর্ণমুখী করেছে।
জেনার মেটালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনিয়র মেটাল স্ট্র্যাটেজিস্ট পিটার গ্রান্ট বলেন, “সরকারি অচলাবস্থা থেকে সৃষ্ট নিরাপদ বিনিয়োগের প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে, এবং শিগগিরই এর সমাধানের কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না।” তিনি জানান, চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের সোনার ওপর আস্থা আরও বাড়িয়েছে।
চলতি বছর স্বর্ণের দাম ইতোমধ্যেই ৫২ শতাংশ বেড়েছে। সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ কেনা, স্বর্ণ-ভিত্তিক তহবিলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দুর্বল মার্কিন ডলার—এই সব কারণ মিলেই বাজারে রেকর্ড উত্থান ঘটিয়েছে।
মার্কিন সরকারের অচলাবস্থা সপ্তম দিনে প্রবেশ করেছে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচক প্রকাশ বিলম্বিত হয়েছে, এবং বিনিয়োগকারীরা এখন ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুমান করতে বেসরকারি তথ্যের ওপর নির্ভর করছেন।
ফ্রান্স ও জাপানের রাজনৈতিক অস্থিরতা দ্বিতীয় দিনের মতো মুদ্রা ও বন্ডবাজারে চাপ সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে, বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, চলতি মাসের শেষে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহার কমাতে পারে, এবং ডিসেম্বরেও আরও একটি কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রত্যাশা স্বর্ণের দাম আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৮ অক্টোবর ২০২৫