বিপাকে ব্রিটেন, সরকারি খরচ যোগাতে ভিসা আবেদনকারীদের ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সুনাকের সরকার।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বৃহস্পতিবার বলেছেন, পাবলিক সেক্টরের মজুরি বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য উচ্চ ফি এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ফি প্রদান করতে হবে ভিসা আবেদনকারীদের।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক, পুলিশ, জুনিয়র ডাক্তার এবং অন্যান্য সরকারী সেক্টরের কর্মীদের বেতনের একটি স্বাধীন পর্যালোচনার সুপারিশ গ্রহণের ক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরে চাপের মধ্যে আছেন। সম্প্রতি কর্মচারিদের বেতন ৫ থেকে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন সুনাক। সম্প্রতি তিনি জোর দিয়েছেন উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি সামাল দিতে সরকার আর কী কী উপায়ে আয় করতে পারে তা ভেবে দেখতে। ভিসা আবেদনকারীদের ফি বৃদ্ধি তারই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।
‘যদি সরকারি খাতে কর্মীদের আরও বেশি অর্থ প্রদানকে অগ্রাধিকার দিতে হয় তবে সেই অর্থ অন্য কোথাও থেকে আসতে হবে, কারণ এই খাতে জনগণের করের টাকা খরচ করার জন্য আমরা প্রস্তুত নই’ বলে মন্তব্য করেন ঋষি সুনাক। প্রধানমন্ত্রী ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, মুদ্রাস্ফীতির সাথে পাল্লা দিতে হবে দেশবাসীকে। এছাড়া এই মুহুর্তে নতুন করে ঋণ নেওয়া ঠিক সিদ্ধান্ত হবে না বলেও মতামত প্রকাশ করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
অর্থের উৎস খুঁজে বের করার জন্য আমরা দুটি কাজ করেছি। প্রথমত, আমরা অভিবাসীদের জন্য বিভিন্ন খাতে চার্জগুলি বাড়াতে চলেছি। এই দেশে আসা বিদেশি নাগরিকদের ভিসার জন্য আবেদন ফি বৃদ্ধি এবং ইমিগ্রেশন হেলথ সারচার্জ সহ অন্যান্য পরিষেবার জন্য চার্জ বৃদ্ধি হতে যাচ্ছে। বিদেশি নাগরিকদের এনএইচএস অ্যাক্সেস করার জন্য যে শুল্ক পাওয়া যাবে, তা থেকে ঘাটতি মিটবে’ এমনই জানিয়েছেন সুনাক।
প্রসঙ্গত, গত দুই বছর ধরে বেড়েই চলেছে ব্রিটেনের জিনিস পত্রের দাম। দুরন্ত গতির মুদ্রাস্ফীতিতে নাজেহাল হলে ব্রিটিশ সরকার চাইছে নতুন পথে আয়ের সন্ধান করতে। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়েনি বেতন। কোথাও সামান্য বাড়লেও উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। বরং চাকরি গেছে অনেকের। ফলে পকেটে পয়সা নেই দেশের বড় অংশের মানুষেরই। কেউ কেউ না খেয়েই ঘুমাতে যাচ্ছেন দেশের নানান প্রান্তে, এমনই অবস্থা দেশের।
বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ব্রিটেনের এই অবিশ্বাস্য পরিস্থিতির জন্য দায়ী বিশ্বজোড়া অর্থনীতির বেহাল দশা। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি ৭ জনে ১ জন ব্যক্তি পেট ভরানোর মত খাবার জোগাড় করতে পারেনি গত বছর। চলতি বছরে দেশের অর্থনীতির কিছুটা অগ্রগতি হলেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না খরচ। এই পরিস্থিতিতেই বিদেশি নাগরিকদের ভিসার আবেদন বাবদ ফি ও অন্যান্য পরিষেবা মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্রিটিশ সরকার।
এম.কে
১৬ জুলাই ২০২৩