ইমিগ্রেশনের নিয়ম অনুযায়ী ইউকেতে ‘সেটেলড’ স্টাটাসের জন্য আপনার অবশ্যই ‘ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন’ (আই এল আর) থাকতে হবে। কোর্স শুরু হওয়ার আগে আপনাকে আই এল আর দেওয়া না হলে পুরো একাডেমিক কোর্সের জন্য স্টুডেন্ট লোন পাওয়ার সুযোগ নেই। ওদিকে আইএলআর পেতে দেরি হওয়াটা আপনার দোষে ঘটছে না। হোম অফিসের ‘প্রায়োরিটি সার্ভিসের’ মাধ্যমে আপনি দ্রুত ডিসিশন পাওয়ার আশায় থাকলে দেখতে পাবেন সার্ভিসটি প্যানডেমিকের কারণে স্থগিত।
এটা কোনো কাল্পনিক গল্প না। গত সপ্তাহে হাইকোর্টে ‘নাঈম বনাম শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী’ শীর্ষক মামলায় এমনটিই দেখা গেছে।
হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, যেসব শিক্ষার্থী কোভিড-১৯ এর কারণে হোম অফিসের অগ্রাধিকার পরিষেবাগুলো স্থগিত থাকায় কোর্স শুরুর আগে আইএলআর পাননি, তারা স্টুডেন্ট লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যারা নিজেদেরকে একই রকম পরিস্থিতিতে খুঁজে পাবেন তাদের জন্য সিদ্ধান্তটি খুবই উপযোগী হবে।
মানবাধিকার সম্পর্কিত ইউরোপীয় কনভেনশনের প্রথম প্রটোকলের অনুচ্ছেদ দুই বলে যে: “কোনো ব্যক্তিকে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে না”। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যখন একটি দেশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে তখন সেখানে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হয়। ওদিকে ইউকেতে বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। বেতনের কারণে যেন কেউ পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্যে শিক্ষার্থীদের লোন দেওয়া হয়।
৩৪ বছরের নাঈম পাকিস্তানের নাগরিক যিনি ২০১৫ সাল থেকে ইউকেতে বসবাস করেন। ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে তিনি আইএলআর আবেদনের যোগ্য হলে একই বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করার জন্য ‘প্রায়োরিটি সার্ভিসের’ দ্বারস্থ হন। একই সময়ে তার কোর্স শুরু হওয়ার কথা। প্যানডেমিকের কারণে ২০২০ সালের ৩০ মার্চ থেকে সার্ভিসটি স্থগিত থাকায় তিনি তা করতে অক্ষম ছিলেন। সিদ্ধান্তের জন্য তাকে আরও ছয় মাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
ওই বছরের ২৩ নভেম্বরের আগে পর্যন্ত তার আবেদন মঞ্জুর হয়নি। ওদিকে তার কোর্স আগেই শুরু হয়ে যায়। এর কারণে তিনি স্টুডেন্ট লোনের জন্য আবেদন করতে পারেননি।
নাঈম যুক্তি দিয়েছিলেন যে স্টুডেন্ট ফাইন্যান্স রেগুলেশনস তার সাথে বেআইনিভাবে বৈষম্য করেছে, যেগুলো আর্টিকেল ১৪, আর্টিকেল ২ ও প্রটোকল ১-এর পরিপন্থী।
১৫ জানুয়ারি ২০২২
এনএইচ