বছর শেষে আবারো একবার অশান্ত হয়ে উঠল উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে মণিপুরে বিরাজ করেছে সহিংসতা। মেইতেই বনাম কুকি সংঘর্ষে বার বার উত্তপ্ত হয়েছে ওই রাজ্য।
শনিবার রাতে সীমান্তবর্তী শহর মোরেতে পুলিশ কমান্ডোদের ওপর হামলা চালায় সশস্ত্র গ্রুপ। আরপিজি নিক্ষেপ হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে। এতে পুলিশের ব্যারাক বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আহত হয়েছে চারজন।
এই বিষয়ে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, বিকেলে হাইওয়ের হামলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে রাতে আবার পুলিশের উপর হামলা হয়। আহত কমান্ডোদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার পর আসাম রাইফেলসের উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে কারফিউ জারি করা হয়।
গত ৩ মে থেকে জাতিগত সহিংসতার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে বেশিরভাগ মানুষকে সরানো হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘সশস্ত্র গ্রুপ’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে ওই রাজ্যে।
ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মেইতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছিল, তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এ দাবির বিরোধিতা জানিয়েছিল স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই পরিস্থিতিতে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। মিছিলকে ঘিরেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়।
এদিকে তফসিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। গত এপ্রিল মাসে চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বিরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। সেখান থেকে কুকি আদিবাসী বনাম মেইতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্য জেলাতেও। আর এখন পর্যন্ত সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে কয়েক শ’ সাধারণ মানুষ।
সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস
এম.কে
০২ জানুয়ারি ২০২৩