যুক্তরাজ্য সরকারের বিদেশি সাহায্যের অর্থ (ফরেন এইড) ব্যবহার করে দেশের ভেতর আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেল খরচ চালানোর বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে হোম অফিস। আশ্রয় ব্যবস্থাপনার খরচ কমাতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও, সাম্প্রতিক তথ্য বলছে—ব্যয় কমার চেয়ে তা প্রায় একই রকম থেকে যাচ্ছে।
বিবিসির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হোম অফিস বিদেশি উন্নয়ন সহায়তা (ODA) থেকে £২.২ বিলিয়ন ব্যয় করার পরিকল্পনা করেছে, যা আগের বছরের £২.৩ বিলিয়নের চেয়ে খুব সামান্য কম। এই অর্থের বড় একটি অংশ যাচ্ছে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য হোটেল আবাসনের খরচ মেটাতে।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩২,০০০ আশ্রয়প্রার্থী বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছেন। হোম অফিস জানিয়েছে, তারা আশ্রয় আবেদন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া দ্রুততর করার মাধ্যমে এই ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছে এবং গত অর্থবছরে ইতোমধ্যে অর্ধ বিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় করা হয়েছে, যার মধ্যে £২০০ মিলিয়ন আবার কোষাগারে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কারণ বিদেশি সাহায্যের অর্থ সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোর দারিদ্র্য দূরীকরণ, মানবিক সহায়তা এবং স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হওয়ার কথা। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, যদিও বিদেশি সহায়তা থেকে কিছু অর্থ দেশীয় আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য খরচ করা যায়, কিন্তু এত বড় পরিমাণে এই ব্যয় কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্লেষকরা।
লেবার পার্টি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে এ প্রসঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে—তারা “আসাইলাম হোটেল” ব্যবস্থা বন্ধ করবে, যাতে করদাতাদের বিপুল অর্থ সাশ্রয় সম্ভব হয়।
উল্লেখযোগ্য যে, কনজারভেটিভ সরকার ২০১৯ সালে যে বড় আকারের আবাসন চুক্তিগুলো করেছিল, তার আওতায় তিনটি কোম্পানিকে £৪.৫ বিলিয়ন পাউন্ড প্রদান করা হবে ১০ বছরের মধ্যে, যাতে তারা আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসনের দায়িত্ব নিতে পারে।
সরকার বলছে, হোটেল নির্ভরতা কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের দিকে এগোতে চায় তারা। তবে বাস্তবতা হলো—প্রতিদিনের খরচ, নতুন আগমন এবং ধীর প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এই প্রচেষ্টাকে কঠিন করে তুলছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
০৭ জুন ২০২৫