ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ ও শুষ্ক বসন্তের প্রেক্ষাপটে ইয়র্কশায়ার ওয়াটার চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে হোসপাইপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। শুক্রবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। ফলে বাসাবাড়িতে বাগানে পানি দেওয়া, গাড়ি ধোয়া, সুইমিং পুল বা ফোয়ারা পরিষ্কারসহ একাধিক কাজের জন্য হোসপাইপ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ১,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা গুণতে হতে পারে।
ইয়র্কশায়ার ওয়াটারের পরিচালক ডেভ কেই জানিয়েছেন, “এই সিদ্ধান্ত হালকা ভাবে নেওয়া হয়নি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যাতে এমন পর্যায়ে না যেতে হয়। কিন্তু টানা শুষ্কতা ও জলাধারে পানির ঘাটতি আমাদের এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।”
এবছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ইয়র্কশায়ারে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার, যা স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেকেরও কম। মার্চ থেকে মে সময়কালের মধ্যে ইংল্যান্ডে এটাই ছিল সবচেয়ে উষ্ণ ও সবচেয়ে শুষ্ক বসন্ত। এরপর রেকর্ড ভাঙা উষ্ণতায় জুন মাস অতিবাহিত হয়।
বর্তমানে ইয়র্কশায়ারের জলাধারগুলোর পানির মজুদ রয়েছে মাত্র ৫৫.৮ শতাংশ—যা সাধারণ সময়ের তুলনায় প্রায় এক-চতুর্থাংশ কম। জুন মাসেই পরিবেশ সংস্থা পুরো ইয়র্কশায়ারকে ‘খরা কবলিত’ অঞ্চল ঘোষণা করেছে। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সামনে আরও শুষ্ক আবহাওয়া ও তাপপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, হোসপাইপ দিয়ে বাগানে পানি দেওয়া, গাড়ি বা নৌকা ধোয়া, গাছপালা সিঞ্চন, প্যাডলিং পুল বা হট টাব ভরা, বাড়ির জানালা বা দেয়াল পরিষ্কার, এমনকি ব্যক্তিগত ফোয়ারায় পানি দেওয়া নিষিদ্ধ থাকবে। তবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে হোসপাইপ ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়া ব্লু ব্যাজধারী, ওয়াটারসিওর স্কিমে থাকা রোগী এবং ইয়র্কশায়ার ওয়াটারের প্রাধান্য তালিকাভুক্ত গ্রাহকদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞায় ছাড় দেওয়া হয়েছে।
ডেভ কেই আরও বলেন, “এই নিষেধাজ্ঞা শুধু সাময়িক সমাধান নয়। আমাদের লক্ষ্য আগামী বছর পর্যন্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় পরিবেশ রক্ষা করা। প্রয়োজন হলে পরিবেশ সংস্থার কাছ থেকে ড্রাউট পারমিট চেয়ে আরও পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইয়র্কশায়ার ওয়াটার জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে এবং তা শীতকাল পর্যন্ত গড়াতে পারে।
সূত্রঃ আইটিভি
এম.কে
০৮ জুলাই ২০২৫