ইউরোপীয় কমিশন যুক্তরাজ্যের সাথে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে ব্রেক্সিটের আগে যেভাবে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে গতিশীলতা ছিল তা যেন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। সর্বোচ্চ ৩০ বছর বয়সীদের জন্য এই ছাড়ের ব্যাপারে কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় কমিশন।
ইইউ নেতারা জানিয়েছেন, আলোচনা শুরু করার পর এই ব্যাপারে অনুমোদন নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন তারা। যাতে একে অপরের দেশে বাস করার অধিকারের সুযোগ ফিরে পায় সীমিত সময়ের জন্য এবং কঠোর শর্তাদি শিথিল করতেও কাজ করবেন ইউরোপীয় কমিশনের নেতারা বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়।
উত্তর আয়ারল্যান্ডে ব্রেক্সিট পরবর্তী ট্রেডিং চুক্তির কথা উল্লেখ করে কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেয়েন বলেন, “যেহেতু আমাদের উইন্ডসর চুক্তি রয়েছে, তাই সম্পর্কটি অনেক বেশি গঠনমূলক হয়েছে। আমরা একে অপরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হতে পারি। যুব গতিশীলতা উভয় দিকের জন্যই প্রয়োজন।”
ইউরোপীয় কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, এমন একটি চুক্তির কথা ভাবা হচ্ছে যার আওতায় ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়স সীমা পর্যন্ত গন্তব্য দেশে চার বছর অবধি থাকতে সক্ষম হবে।
যদি উভয় পক্ষ এতে সম্মত হন, তাহলে ইয়ুথ মোবিলিটি স্কিম নামের ভিসা ব্যবস্থা চালু হতে পারে। তবে এই ভিসায় যোগ্যতার জন্য স্বাস্থ্য বীমা এবং পর্যাপ্ত জীবিকা নির্বাহের তহবিলের প্রমাণ প্রদান করতে হবে। সারা বিশ্বজুড়েই ইয়ুথ মোবিলিটি স্কিম চালু রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেন।
কমিশন জানায়, ” ইয়ুথ মোবিলিটি ভিসা স্কিমের উদ্দেশ্য হ’ল ভিন্ন দেশের যুবসমাজের সাথে সম্পর্ক তৈরি হওয়া। তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের যুবাদের যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ, কাজ এবং বসবাস আরও সহজ করা।”
আলোচনার খোলার প্রস্তাবটি প্রথমে ইইউ নেতাদের দ্বারা সম্মত হতে হবে বলে সূত্র জানায়। সূত্র জানিয়েছে আগামী মে মাসে এই বিষয়ে আলোচনার দোয়ার খুলতে পারে।
যদি আলোচনার মাধ্যমে যুব স্কিমটি অনুমোদিত হয় তবে কয়েক মিলিয়ন যুবক যুক্তরাজ্যে সহজে ভ্রমণ, কাজ কিংবা পড়াশোনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারে।
ইউরোপীয় বিষয়ক সুইডিশ মন্ত্রী জেসিকা রোজওয়াল গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ” সুইডেন এই ব্যবস্থার জন্য চাপ দিয়েছে এবং আমরা মনে করি এটি ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের যুব ও শিক্ষার্থীদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ”
যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরাও এই বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছেন বলে জানা যায়। তারা যুক্তি দেখিয়েছেন ফ্রান্সের ইতিমধ্যে কানাডার সাথে এই জাতীয় চুক্তি আছে এবং অস্ট্রেলিয়া যুক্তরাজ্যের সাথে একই রকম চুক্তি করেছিল। ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য সাংস্কৃতিক বিনিময় গড়ে তোলার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হতে পারে।
হাউস অফ লর্ডস ইউরোপীয় বিষয়ক কমিটির সভাপতি লর্ড কিন্নোল, ইয়ুথ মোবিলিটি স্কিমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার মতে, যদি চুক্তিটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয় তাহলে উভয় পক্ষের যুব সমাজের জন্য ব্যাপক সুবিধা নিয়ে আসবে স্কিমটি।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৯ এপ্রিল ২০২৪