ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতির ফলে, এই গ্রীষ্মেই এয়ারপোর্টে দীর্ঘ লাইনের সমস্যার সমাধান আসতে পারে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে।
ব্রিটিশ পাসপোর্টধারীদের জন্য ইউরোপের এয়ারপোর্টে ই-গেট ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির পথে অগ্রগতি হতে চলেছে। চলতি গ্রীষ্মেই এই সুবিধা কার্যকর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা লক্ষ লক্ষ ব্রিটিশ পর্যটকের জন্য ভ্রমণকে অনেক সহজ ও স্বস্তিদায়ক করে তুলবে।
ডাউনিং স্ট্রিট সূত্রে জানা গেছে, ইউরোপীয় বিমানবন্দরে ইউকে নাগরিকদের জন্য ই-গেট চালুর বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা চলছে। বর্তমানে ব্রেক্সিট-পরবর্তী নিয়ম অনুযায়ী ইউরোপ সফরকারী ব্রিটিশদের পাসপোর্ট হাতে চেক ও স্ট্যাম্প করতে হয়, ফলে অধিকাংশ বিমানবন্দরে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হয়।
তবে নতুন চুক্তি হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোপিয়ান ইকোনমিক এরিয়া (EEA) দেশের নাগরিকদের জন্য নির্ধারিত ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট চেকিং গেট বা ই-গেট ব্যবহারের সুযোগ পাবেন ব্রিটিশ নাগরিকরাও।
ইউরোপীয় সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী নিক থমাস-সাইমন্ডস এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা চাই মানুষ যেন সহজে ও দ্রুত সীমানা পার হতে পারে। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা ইউরোপের সঙ্গে জোরালোভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আমি মনে করি, এই চুক্তি ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য খুবই সহায়ক হবে।”
তিনি আরও জানান, খাদ্য ও পানীয় রপ্তানিতে ইউরোপের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তিও আলোচনায় রয়েছে, কারণ বর্তমান চুক্তি কার্যকরভাবে কাজ করছে না। অনেক সময় পণ্যবাহী ট্রাককে দীর্ঘ সময় সীমান্তে অপেক্ষা করতে হচ্ছে, ফলে নষ্ট হচ্ছে দ্রুত নষ্ট হওয়ার মতো পণ্য।
অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন ‘এন্ট্রি অ্যান্ড এক্সিট সিস্টেম’ চালু করতে যাচ্ছে, যেখানে ব্রিটিশ ভ্রমণকারীদের বায়োমেট্রিক তথ্য—যেমন আঙুলের ছাপ ও মুখের স্ক্যান—দিতে হতে পারে। এই পদ্ধতি চালু হলে পাসপোর্টে স্ট্যাম্প দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।
অন্যদিকে, ভিসা-অনুমোদন বিষয়ক পৃথক ‘EU ট্রাভেল অথরাইজেশন’ সিস্টেমও চালুর অপেক্ষায় রয়েছে, যা বছর শেষের আগে কার্যকর হতে পারে।
চলমান আলোচনায় তরুণদের জন্য ‘ইয়ুথ মোবিলিটি স্কিম’ এবং ইউকে শিল্পীদের ইউরোপ সফরের জন্য ভিসা ছাড়ের বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে এসব বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, আগামী দিনে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বলেন, “এই চুক্তি যুক্তরাজ্যের মানুষের জন্য ভালো—চাকুরি, বাজারদর ও সীমানা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। ব্রিটেন এখন বিশ্বমঞ্চে আরও শক্তভাবে নিজের অবস্থান মজবুত করেছে।”
ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য ইউরোপ সফর আবারও সহজ হতে চলেছে। বিমানবন্দরে অপেক্ষার সময় কমে গেলে তা শুধু পর্যটকদের জন্যই নয়, বরং যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নয়নের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হবে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৮ মে ২০২৫