ইতালি থেকে ট্রেনের ছাদে চেপে ফ্রান্স সীমান্তে যাবার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক বাংলাদেশি তরুণ।
রোববার (২৯ আগস্ট) ইতালির পেলিয়া অঞ্চলের কাছে ভেন্তিমিগ্লিয়াতে ট্রেনের ছাদে বসে ফ্রান্স সীমান্তে যাবার সময় মৃত্যু হয় ১৭ বছর বয়সি ওই যুবকের। একটি সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে যখন ট্রেনটি যাচ্ছিল, সেই সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
সীমান্তের কাছে শেষ স্টেশন থেকে যখন ট্রেনটি ছাড়ে, সেই সময় ছাদে লাফ দিয়ে ওঠে সেই তরুণ। ট্রেনের চালক প্রাণপণ চেষ্টা করেন ব্রেক কষে তার প্রাণ বাঁচাতে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
উদ্ধারকর্মীরা যখন তরুণের মৃতদেহ খুঁজে পান, সেইসময় তার পকেট থেকে পাওয়া যায় একটি চিরকুট। সেখানে লেখা ছিল যুবকের বয়স এবং পরিচয়। সাথে তার পকেট থেকে পাওয়া যায় স্থানীয় থানায় হাজিরা দেবার নির্দেশের কাগজ।
স্থানীয় দমকলকর্মীরা যুবকের মরদেহ উদ্ধার করতে লাগলে রেল চলাচল কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় পুলিশ, উদ্ধারকর্মী ও ভেন্তিমিগ্লিয়ার মেয়র গায়েতানো স্কুলিনো।
মেয়র স্কুলিনো ঘটনায় ’গভীর শোক প্রকাশ’ করে ইতালিয়ান রেল কর্তৃপক্ষকে ’রেল যাতায়াতের দুই দিকেই উন্নত নজরদারি ব্যবস্থা গ্রহণের’ অনুরোধ জানান৷
একই পথে গত কয়েক বছরে ফ্রান্সে যেতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০জন। ভেন্তিমিগ্লিয়া ও কান শহরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী কোল দে মর্ট সুড়ঙ্গকে এই ধারাবাহিক দুর্ঘটনার কারণে স্থানীয়রা ডাকেন ’ডেথ পাস’ বা ’মৃত্যু পথ’ নামে।
মৃতদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন মানবপাচারকারী দালালকে বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে থাকেন। কিন্তু বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছানোর আগে টাকা পেয়ে গেলে এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একা রেখে চলে যায় তারা।
ফলে, নানা ধরনের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা, যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ এই বাংলাদেশি যুবকের মর্মান্তিক পরিণতি।
১ সেপ্টেম্বর ২০২১
সূত্র: ইনফো মাইগ্রেন্টস