যুক্তরাষ্ট্র গভীর রাতে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে। প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, ‘বাংকার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করে পরিচালিত এই অভিযানে লক্ষ্যবস্তুগুলো “চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত” হয়েছে।
এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের B-2 বোমারু বিমানের সবচেয়ে বড় অভিযান পরিচালনা করে। সাতটি বোমারু বিমান ১৮ ঘণ্টার মিশনে অংশ নেয়। একই সময় যুক্তরাষ্ট্রের একটি সাবমেরিন ইরানের ইসফাহান অঞ্চলে একাধিক টমাহক ক্রুজ মিসাইল নিক্ষেপ করে।
হামলা চালানো হয় রাত ১৮:৪০ থেকে ১৯:০৫ ইস্টার্ন টাইমের মধ্যে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী এই হামলার কোনো পূর্বাভাস পায়নি এবং কোনো পাল্টা গুলি ছোড়া হয়নি।
হামলার বিষয়ে জেনারেল ড্যান কেইন বলেন, ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনার সামর্থ্য ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, সম্পূর্ণ যুদ্ধক্ষয়ক্ষতির বিশ্লেষণ এখনো শেষ হয়নি, তবে প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—তিনটি লক্ষ্যই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই হামলার নির্দেশ দেন যখন তিনি নিশ্চিত হন যে, আলোচনার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হেগসেথ বলেন, “ট্রাম্প শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছিলেন, কিন্তু ইরান প্রতিটি সুযোগে দেয়াল তুলে দিয়েছে।”
হেগসেথ স্পষ্ট জানান, এই অভিযান কোনোভাবেই ইরানে ‘শাসন পরিবর্তনের’ উদ্দেশ্যে নয়। বরং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রক্ষাই ছিল মূল লক্ষ্য।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে “স্থায়ী পরিণতির” হুমকি দিয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে অভিযুক্ত করেছে।
এর আগে ট্রাম্প ইরানকে “শান্তি স্থাপন” করার আহ্বান জানান এবং হুঁশিয়ার করেন, “ভবিষ্যতে আরও বড় হামলা অপেক্ষা করছে” যদি ইরান সাড়া না দেয়।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই হামলায় তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে “গুরুতর আঘাত” হানা হয়েছে। তবে এখনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, তারা এখনো উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার জবাব দিতে প্রস্তুত। জেনারেল কেইন বলেন, “ইরান যদি পাল্টা হামলা চালায়, তবে তা হবে তাদের জন্য চরম ভুল সিদ্ধান্ত।”
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২২ জুন ২০২৫