25.3 C
London
June 12, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিকযুক্তরাজ্য (UK)

ইসরায়েলকে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সের বিরল হুঁশিয়ারি

গাজায় চলমান ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরল হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্বের তিন প্রভাবশালী পশ্চিমা মিত্র দেশ—যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্স। অবরুদ্ধ গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া সামরিক অভিযান বন্ধ না করলে এবং ত্রাণ প্রবেশে বাধা তুলে না নিলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এই ঐতিহাসিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো স্বাক্ষরিত এই বিবৃতি সোমবার ব্রিটিশ সরকারের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “গাজার ক্ষুধার্ত, উদ্বাস্তু ও আহত বেসামরিক জনগণের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েলের বাধা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি করছে, যা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।” তারা আরও বলেন, “আমরা অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনসংক্রান্ত যেকোনো উদ্যোগেরও বিরোধিতা করছি। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আমরা সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করব না।”

বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধির কৌশল, যা যুদ্ধবিরতির পথ প্রশস্ত করতে পারে।

গত ১৯ মাস ধরে গাজায় লাগাতার সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এক সময়ের সাজানো-গোছানো ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী গাজা উপত্যকা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কয়েক লাখ মানুষ হতাহত হয়েছেন এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার তীব্র সংকটে সেখানে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এর মধ্যেই ১৬ মে ইসরায়েল গাজার একটি কৌশলগত এলাকা দখলের জন্য নতুন অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয়। এই আগ্রাসনের মধ্যেই কাতারের রাজধানী দোহায় যুদ্ধবিরতি আলোচনায় বসেছে হামাস ও মধ্যস্থতাকারীরা। সেখানে হামাস নতুন যুদ্ধবিরতির আওতায় বন্দি মুক্তির প্রস্তাব দেয়।

তবে গতকাল এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানান, “ইসরায়েল পুরো গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নেবে। এখন ভয়াবহ লড়াই চলছে, বিস্তৃত ও তীব্র মাত্রায়। গাজার প্রতিটি অংশ আমাদের দখলে থাকবে।”

এই ঘোষণার পরপরই যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সের বিবৃতি বিশ্ব কূটনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সাধারণত ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ এই তিন দেশ এমন কড়া হুঁশিয়ারি দেয় না। তবে গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় ও নেতানিয়াহুর যুদ্ধপন্থী অবস্থান হয়তো এবার পশ্চিমাদের বাধ্য করেছে ভিন্ন সুরে কথা বলতে।

বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও সাধারণ মানুষ এই বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে। অনেকেই বলছেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে এবং ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে এ ধরনের কূটনৈতিক চাপ ও বাস্তব পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

সূত্রঃ রয়টার্স

এম.কে
২০ মে ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে একদিনে কোভিড আক্রান্তের রেকর্ড

যুক্তরাজ্যে নতুন আবাসন লক্ষ্যমাত্রা

নিউজ ডেস্ক

পার্টিগেট ইস্যুতে বরিস জনসনকে আর কোনো জরিমানা করা হবে না

অনলাইন ডেস্ক