গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার হামলায় ইসরায়েলি দখলদার সেনাবাহিনীর প্রতি পূর্ণ সমর্থন ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী বয়কটের মুখে পড়ে আন্তর্জাতিক কফি চেইনশপ স্টারবাকস। এই বয়কটের ডাকের পর ১৬ নভেম্বর থেকে ১৯ দিনে এই কোম্পানি ১১ বিলিয়ন ডলার মূলধন খুইয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ৭ ডিসেম্বর স্টারবাকসের একটি অফিশিয়াল বিবৃতির বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় সমর্থন দেয় স্টারবাকস। এতে বিশ্বব্যাপী বয়কটের ডাক দেয় বিডিএস মুভমেন্ট ও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনকারীরা। এতে করে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়ে কোম্পানিটি।
গত ১৬ নভেম্বর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমেছে, যা ১১ বিলিয়ন ডলারের সমান বলে জানিয়েছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা। এটি স্টারবাকসের ইতিহাসে সব থেকে বড় পতন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে স্টারবাকস চেইনগুলো বয়কট প্রচারাভিযান এবং একটি অভ্যন্তরীণ কর্মচারী ধর্মঘটের অধীনে ভুগছে, যার ফলে চাহিদা কমেছে।
একজন শিল্প বিশ্লেষক বলেছেন, ‘গাজায় দখলদার ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিপাকে পড়েছে স্টারবাকস। বর্তমানে যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে, তা কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন হবে।’
এদিকে স্টারবাকসের স্টক টানা ১২টি স্টক মার্কেট সেশনে দরপতন হয়েছে। ১৯৯২ সালে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি সবচেয়ে দীর্ঘ দরপতন। স্টকটি বর্তমানে বার্ষিক সর্বোচ্চ ১১৫ ডলার থেকে নেমে শেয়ারপ্রতি প্রায় ৯৫ দশমিক ৮০ ডলারে অবস্থান করছে।
তবে কোম্পানিটি এমন পরিস্থিতিতেও বলছে, তারা অন্যায় কিছু করেনি। যদিও বৈশ্বিক রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যেও ব্র্যান্ডটি খ্যাতি বজায় রাখতে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।
স্টারবাকসের সিইও লক্ষ্মণ নরসিমহান সম্প্রতি বিশ্লেষকদের জানান, তিনি সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও গ্রাহকদের আচরণ পরিবর্তন সত্ত্বেও তাদের ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা সম্পর্কে আশাবাদী। এর কারণ হিসেবে তিনি স্টারবাকসের বৈচিত্র্যময় সেবা বিভাগকে তুলে ধরেন।
এদিকে ভারতের ইকোনমিক টাইমস রিপোর্ট করেছে, বয়কটের প্রতিক্রিয়া সীমানা অতিক্রম করেছে, মিসরের স্টারবাকস বয়কটের প্রভাবের কারণে আর্থিক ক্ষতির পর কর্মীদের সংখ্যাও কমিয়েছে বলে জানা গেছে।
স্টারবাকস শুধু ইসরায়েলিদের সমর্থনই দেয়নি, ফিলিস্তিন ও হামাসকে সমর্থনের অভিযোগে কর্মচারী ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ৮৬টি দেশে ৩৫ হাজারের বেশি শাখা রয়েছে কোম্পানিটির; যার বেশির ভাগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত।
সূত্রঃ বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
এম.কে
০৯ ডিসেম্বর ২০২৩