15.6 C
London
October 16, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

‘ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদ’ রুখতে ইতালিতে বোরকা ও নিকাব নিষিদ্ধের বিল

ইতালিতে বোরকা ও নিকাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী সরকার। ব্রাদার্স অব ইতালি দল পার্লামেন্টে যে বিলটি উত্থাপন করেছে, তাতে বলা হয়েছে—স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, দোকান ও অফিসসহ জনসমাগমস্থলে এই মুখঢাকা পোশাক পরলে ২৬০ থেকে ২,৬০০ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।

 

দলটি বিলটিকে “ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে আইন” হিসেবে অভিহিত করেছে। সরকারের দাবি, এটি ধর্মীয় উগ্রবাদ, চরমপন্থা ও ধর্মীয় বিদ্বেষ দমনের উদ্দেশ্যে প্রণীত। একই বিলের মাধ্যমে কুমারীত্ব পরীক্ষা অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং জোরপূর্বক বিয়ের ক্ষেত্রে ধর্মীয় জবরদস্তিকে নতুন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আইনটিতে ইসলামি ও অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠনের অর্থায়নে কঠোর স্বচ্ছতা বিধান আরোপের কথাও বলা হয়েছে। যারা ইতালির রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় নেই—তাদের সমস্ত অর্থের উৎস প্রকাশ করতে হবে এবং কেবল নিরাপদ ও বৈধ উৎস থেকেই অর্থ গ্রহণের অনুমতি থাকবে। বর্তমানে কোনো মুসলিম সংগঠন এই আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে নেই, ফলে আইনটি কার্যকর হলে তাদের আর্থিক কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী মেলোনির জোট সরকার সংসদে দৃঢ় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে, তাই বিলটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। এর আগে ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় লোম্বার্ডি প্রদেশ ২০১৫ সালে সরকারি ভবন ও হাসপাতালে মুখঢাকা পোশাকে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। জোটের অংশীদার দল ‘দ্য লীগ’ চলতি বছর মুখঢাকা পোশাক নিয়ে আরও সীমিত একটি আইন প্রস্তাব করেছিল, যা বর্তমানে সংসদীয় কমিশনে পর্যালোচনাধীন রয়েছে।

একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী মেলোনি ও তার দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে “গণহত্যায় সহযোগিতার” অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা হয়েছে। তিনি এ অভিযোগকে “অভূতপূর্ব ও অবিচারপূর্ণ” বলে মন্তব্য করেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইতালিজুড়ে গাজায় হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে, যেখানে মেলোনির নীতিরও তীব্র সমালোচনা উঠে এসেছে।

ফ্রান্স ছিল ইউরোপের প্রথম দেশ, যারা ২০১১ সালে বোরকা পরা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে। এরপর অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, তিউনিসিয়া, বেলজিয়াম, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ডসহ ২০টিরও বেশি দেশ একই পথে হেঁটেছে। ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতও এসব নিষেধাজ্ঞাকে বারবার সমর্থন দিয়েছে, উল্লেখ করে যে “সহাবস্থান রক্ষার স্বার্থে রাষ্ট্র চাইলে এমন পোশাক সীমিত করতে পারে।”

এদিকে যুক্তরাজ্যে এই ইস্যু নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। চলতি বছরের জুনে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার বোরকা নিষেধাজ্ঞার দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। তবে রিফর্ম পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ বলেছেন, বোরকা “ব্রিটিশবিরোধী” এবং এ নিয়ে জাতীয় আলোচনার সময় এসেছে।

সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ

এম.কে
১৬ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

অস্ত্র রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পৌষ মাস’, চীনের ‘সর্বনাশ’

ভারতে মেলায় শ্লীলতাহানির শিকার মন্ত্রীর মেয়ে

মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত কেউ জাতিসংঘ মিশনে যেতে পারবে না