যুক্তরাজ্য মেট্রোপলিটন পুলিশের দুই কর্মকর্তা পাব থেকে ফেরার পর পুলিশ স্টেশনের লিফটে যৌনকর্মে জড়িয়ে পড়েন। মুখ দিয়ে লেহন ও যৌন কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার সময় তারা সহকর্মীদের হাতে ধরা পড়েন।
দুজনই স্বীকার করেছেন যে ঘটনাটি ঘটেছিল, তবে তারা গুরুতর অসদাচরণের বিষয়ে অস্বীকার করেছেন।
মেট পুলিশের দুই কর্মকর্তা, যারা প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে পরিচিত, মাতাল অবস্থায় পাব থেকে ফেরার পর পুলিশ স্টেশনের সার্ভিস লিফটে ঘটনাটি ঘটে।
ট্রেইনি ডিটেকটিভ কনস্টেবল পিয়ার্স লিঞ্চ এবং ডিটেকটিভ কনস্টেবল জেসিকা মার্টিন স্বীকার করেছেন যে, “খুব দ্রুত ও অত্যন্ত আবেগপ্রবণ” সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাদের মধ্যে।
এই সপ্তাহের পুলিশ শুনানিতে উভয়েই গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ অস্বীকার করেন, তবে স্বীকার করেন যে পাবে চুম্বনের পর দশ সেকেন্ডের একটি “স্বতঃস্ফূর্ত” যৌন কার্যকলাপ ঘটেছিল।
মেট পুলিশের প্রতিনিধি এলিজাবেথ অ্যাকার বলেন, ঘটনাটি ঘটেছিল ১৬ নভেম্বর, ২০২২ সালে রাত ৯:৪০ মিনিটে, কর্তব্যকালীন সময়ের বাইরে।
মার্টিন এবং লিঞ্চ সহকর্মীদের সঙ্গে তিন ঘণ্টা ধরে বিয়ার পান করার পর পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন পুলিশ স্টেশনে তাদের ব্যাগ নিতে ফিরে যান।
কিন্তু তারা হাতেনাতে ধরা পড়েন, যখন দুইজন পুলিশ কনস্টেবল লিফটে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন এবং লিঞ্চকে তার প্যান্ট নামানো অবস্থায় দেখেন।
মিস অ্যাকার শুনানিতে বলেন, “তারা সহকর্মীদের সঙ্গে একটি পাবে সময় কাটাচ্ছিলেন। তারা দুজনই স্বীকার করেছেন যে তখন তারা মাতাল ছিলেন। তারা কর্তব্যে ছিলেন না, তবে পুলিশ স্টেশনে ফিরে এসেছিলেন।
“পুলিশ কনস্টেবল ফ্লাহার্টি এবং ফ্রস্ট-স্মিথ সার্ভিস লিফটের দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন।
“যখন লিফটের দরজা খুলে যায়, তারা দেখেন ট্রেইনি ডিটেকটিভ কনস্টেবল মার্টিন ডিটেকটিভ কনস্টেবল লিঞ্চের সাথে যৌন কার্যকলাপ করছেন।”
শুনানিতে জানা যায়, এই অশালীন দৃশ্য দেখে দুইজন পুলিশ সদস্য জিজ্ঞাসা করেন, “তোমরা কী করছ?”, এবং লিফটে না গিয়ে সিঁড়ি ব্যবহার করো।
পুলিশ কনস্টেবল ফ্রস্ট-স্মিথ বলেন, “এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
এরপর তারা বিষয়টি একজন সার্জেন্টকে জানান, যা অভ্যন্তরীণ তদন্তের সূচনা করে।
প্রশিক্ষণার্থী পুলিশ সদস্য মার্টিন দাবি করেন যে তিনি লিফটের মধ্যে যৌন কর্মকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে তা স্মরণ করতে পারছেন না। তবে দুইজন ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন সে কথা স্বীকার করেছেন।
পাঁচ বছর ধরে কর্মরত লিঞ্চ একটি লিখিত বিবৃতিতে তদন্তকারীদের বলেন, “লিফটে প্রবেশ করার পর আমরা চুম্বন করতে শুরু করি এবং খুব দ্রুত পরিস্থিতি আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠে।
“জেস আমার জিপ খুলে দেয়, আমি আমার বোতাম খুলে দেই, এবং সে আমার বক্সারের ওপর দিয়ে আমার লিঙ্গ স্পর্শ করতে শুরু করে।”
লিঞ্চ দাবি করেন যে তিনি লিফটের বাইরে পায়ের শব্দ শুনে দ্রুত নিজের পোশাক ঠিক করতে শুরু করেন। এবং জোর দিয়ে বলেন যে তিনি “কোনও সময় উত্তেজিত ছিলেন না।”
লিফটে থাকা কনস্টেবল জেসিকা মার্টিন, দাবি করেছেন তাদের কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের দ্বারা দেখা সম্ভব ছিল না।
পিসি লিঞ্চও জোর দিয়ে বলেছেন তিনি সার্ভিস লিফটে প্রবেশ করেছিলেন যৌন কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে নয়।
প্যানেলের প্রধান ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অ্যালেক্সিস বুন বলেছেন: “প্যানেল এই বিষয়ে নিশ্চিত যে ঘটনাটি ঘটার সময় উভয় কর্মকর্তা ডিউটির বাইরে ছিলেন। তারা একটি পাব থেকে কয়েক ঘণ্টা মদ্যপান শেষে স্টেশনে ফিরে তাদের ব্যাগ নিতে এসেছিলেন।
“প্যানেল মনে করে, মার্টিন এবং লিঞ্চ কেউই জানতেন না যে তাদের যৌন কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষ কখনও জানতে পারবে। তবে প্যানেলের মতে, উভয়েরই সচেতন থাকা উচিত ছিল যে সার্ভিস লিফটটি অন্য সাধারণ পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক ব্যবহৃত হতে পারে।
তাই প্যানেল মনে করে উভয় কর্মকর্তারই জানা উচিত ছিল তাদের যৌন কার্যকলাপ যে কেউ দেখে ফেলতে পারে।
খবরে জানা যায়, প্যানেল শুক্রবার সিদ্ধান্ত দিবে, পুলিশ কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড গুরুতর অসদাচরণের পর্যায়ে পড়ে কিনা।
যদি তারা দোষী প্রমাণিত হন, তবে উভয় কর্মকর্তার চাকুরি চলে যেতে পারে।
উল্লেখ্য যে, প্রতি বছর প্রায় এক ডজন পুলিশ কর্মকর্তা কাজের সময় যৌন কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার জন্য চাকুরি হারান।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
১২ ডিসেম্বর ২০২৪