উত্তর আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি টাইরোনের মোইগ্যাশেল গ্রামে এক লয়ালিস্ট বনফায়ারে শরণার্থী নৌকার কল্পচিত্র ও লাইফজ্যাকেট পরা এক ডজন পুতুল স্থাপন করায় ব্যাপক ক্ষোভ ও নিন্দা ছড়িয়ে পড়েছে। ‘স্টপ দ্য বোটস’ এবং ‘ভেটেরান্স বিফোর রিফিউজি’ লেখা প্ল্যাকার্ডসহ একটি কাঠের স্তূপের ওপর এসব প্রতীক বসিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সেটি জ্বালানো হবে বলে জানানো হয়।
সিন ফেইনের স্থানীয় অ্যাসেম্বলি সদস্য কোলম গিল্ডারনিউ একে “জঘন্য ও বর্ণবাদী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “এটি স্পষ্টভাবে ঘৃণা উসকে দেয় এবং অবিলম্বে সরিয়ে ফেলা উচিত। যারা এখানে আশ্রয় নিচ্ছে, তারা আমাদের শত্রু নয় বরং প্রতিবেশী ও বন্ধু।”
এসডিএলপি কাউন্সিলর মালাচি কুইন ঘটনাটি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করেছেন। তিনি বলেন, “রেসিজম ও ভীতি প্রদর্শন কোনো সংস্কৃতি নয়। এটা গর্বের কিছু নয়, এটা নোংরা বিষ।”
অ্যালায়েন্স পার্টির কাউন্সিলর এডি রুফে জানান, এই ধরনের ‘প্রদর্শনী’ সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করে এবং পুরো সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে না। তিনি বলেন, “যারা এসব করছে, তারা শুধু ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে এবং চরম ডানপন্থী মতবাদ ছড়াচ্ছে।”
এই বনফায়ারটি প্রতিবছরের মতোই রাজা উইলিয়াম III-এর ক্যাথলিকদের বিরুদ্ধে ১৬৯০ সালের জয়কে স্মরণ করে আয়োজিত লয়ালিস্ট উৎসবের অংশ। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক বনফায়ার বিতর্কিত হয়ে উঠেছে, যেখানে আইরিশ পতাকা ও রাজনৈতিক নেতার কল্পচিত্র পোড়ানো হয়।
গত মাসে বেলিমেনা ও অন্যান্য এলাকায় অভিবাসনবিরোধী দাঙ্গা এবং চ্যানেল পার হয়ে ছোট নৌকায় ব্রিটেনে প্রবেশ করা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়ার প্রেক্ষাপটে মোইগ্যাশেলের এই বনফায়ার নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে।
ডিইউপি বলেছে, বনফায়ারগুলো “ইতিবাচক সাংস্কৃতিক উদযাপন” হওয়া উচিত এবং এতে পতাকা বা কল্পচিত্র পোড়ানো সমর্থনযোগ্য নয়।
তবে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা লয়ালিস্ট অ্যাক্টিভিস্ট জেমি ব্রাইসন এই প্রদর্শনীকে শিল্পময় প্রতিবাদ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, “মোইগ্যাশেল বনফায়ারের এই বার্ষিক শিল্পকর্ম এখন একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এ বছর তাদের বার্তা গণহারে অবৈধ অভিবাসন বন্ধের দাবি।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৯ জুলাই ২০২৫