আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) খাতে ব্রিটেনকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সোমবার নতুন পরিকল্পনা প্রকাশ করবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে তিনি যুক্তরাজ্যে ডেটা সেন্টারের জন্য বিশেষ অঞ্চল তৈরির প্রতিশ্রুতি দেবেন এবং আরও গ্র্যাজুয়েটদের প্রযুক্তিবিষয়ক কোর্সে ভর্তি হতে উৎসাহিত করবেন।
স্টারমার বলেন, তিনি দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল অনুঘটক হিসেবে এআইকে ব্যবহার করতে চান। যদি এআই প্রযুক্তি দেশজুড়ে সব খাতে কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয়, তবে এটি বছরে ১ দশমিক ৫ শতাংশ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবে। এর ফলে দেশটির অর্থনীতিতে প্রতি বছর ৪৭ বিলিয়ন পাউন্ড (৫৭ বিলিয়ন ডলার) যোগ হবে।
স্টারমারের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘আমাদের পরিকল্পনা যুক্তরাজ্যকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এআই দেশে পরিণত করবে। এর মাধ্যমে আরও চাকরি এবং বিনিয়োগ আসবে যুক্তরাজ্যে এবং জনগণের পকেটে আরও টাকা যুক্ত হবে।’
স্টারমারের লন্ডনে এআই বিষয়ক ভাষণের আগে, সরকার জানিয়ে যে, তারা গত বছরের মেট ক্লিফোর্ডের উপস্থাপিত ‘এআই সুযোগ কর্মপরিকল্পনা’ প্রতিবেদনের ৫০টি সুপারিশ গ্রহণ করবে। এর মধ্যে রয়েছে, ডেটা সেন্টার নির্মাণ সহজ করতে পরিকল্পনার অনুমোদন দ্রুত দেওয়ার এবং সেগুলোর জন্য যথেষ্ট বিদ্যুৎ শক্তি সংযোগ নিশ্চিত করা। প্রথম ডেটা সেন্টারটি কুলহাম, অক্সফোর্ডশায়ারে নির্মিত হবে, যেখানে ব্রিটেনের ব্রিটেনের পারমাণবিক শক্তি কর্তৃপক্ষ অবস্থিত।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এআই প্রযুক্তিতে নিজেদের শীর্ষস্থানীয় কেন্দ্রে পরিণত করার জন্য প্রতিযোগিতা করছে। তবে এই প্রযুক্তির ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপের প্রয়োজনীয়তাও অনুভূত হচ্ছে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম এআই বাজার। এটি বিনিয়োগ এবং পেটেন্টের মতো সূচক দিয়ে পরিমাপ করা হয়েছে।
১৯৯৩ সালের পর সবচেয়ে বড় কর বৃদ্ধি বাজেট প্রস্তাব করার সিদ্ধান্তে লেবার সরকারের ওপর থেকে কিছু ব্যবসায়িক আস্থা কমে গেছে। গত মাসে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড জানিয়েছে, দেশের অর্থনীতি গত ত্রৈমাসিকে কোনো প্রবৃদ্ধি অর্জন করেনি। তবে এর বিপরীতে স্টারমার জানায়, এআই মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে, বিশেষ করে পরিকল্পনার পরামর্শ দ্রুততম সময়ে প্রদান, ছোট ব্যবসায়ীদের সাহায্য করা এবং শিক্ষকদের জন্য প্রশাসনিক কাজ কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের পাঠদান ফোকাস করা।
তিনি বলবেন, ‘বিশ্বের কঠোর প্রতিযোগিতার মধ্যে, আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। আমাদের দ্রুত এগোতে হবে এবং পদক্ষেপ নিতে হবে।’
তথ্যসূত্রঃ রয়টার্স ও এএফপি
এম.কে
১৩ জানুয়ারি ২০২৫