যুক্তরাজ্যের নিত্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি এপ্রিলে কিছুটা কমে এসেছে। যদিও এরপরও তা রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে। বাজারবিশ্লেষক প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যে এমন চিত্র দেখা গেছে। এর ফলে জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে দিশেহারা দেশটির ভোক্তারা কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়।
বাজার গবেষক কান্তারের তথ্য বলেছে, ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে নিত্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ। মার্চের ১৭ দশমিক ৫ শতাংশের তুলনায় যা কিছুটা কম। এপ্রিলসহ টানা ১০ মাস নিত্যপণ্যে দুই অংকের মূল্যস্ফীতি দেখছে দেশটি। ডিম, দুধ ও পনিরের মতো পণ্যগুলোর দাম বেড়েছে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে।
কান্তারের রিটেইল অ্যান্ড কনজিউমার ইনসাইটের প্রধান ফ্রেজার ম্যাককেভিট বলেন, ‘নিত্যপণ্যের মূল্যস্ফীতিতে এমন পতন ক্রেতাদের জন্য বেশ সুখবর বয়ে আনবে। ২০২২ সালের মার্চে যখন হার কমে গেছিল তখন আমরা এখানে ছিলাম, আর দেখছিলাম চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সেটা আবার বেড়ে যায় কিনা।’
কান্তারের তথ্যে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যের সরকারি তথ্য বলছে, মোটের ওপর ভোক্তা দামে মূল্যস্ফীতি মার্চে ১০ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে, যদিও খাবার ও অ্যালকোহল নয়—এমন পানীয়র দাম মার্চে এক বছর আগের তুলনায় ১৯ দশমিক ১ শতাংশ বেশি ছিল। ১৯৭৭ সালের পর এবারই এত বেশি বৃদ্ধি দেখল যুক্তরাজ্য।
সবচেয়ে বড় সুপারমার্কেট গ্রুপ ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়ামের প্রত্যাশা আগামী কয়েক মাসে ভোক্তা পর্যায়ে খাবারের দাম কিছুটা কমে আসতে শুরু করবে। অন্যদিকে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের পূর্বাভাস বলছে, বছর শেষে মোট মূল্যস্ফীতি নেমে আসবে ৪ শতাংশের নিচে।
কান্তার বলছে, এক বছর আগের তুলনায় গত চার সপ্তাহে নিত্যপণ্যের বিক্রি বেড়েছে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। বিশ্লেষক সংস্থাটি বলছে, ব্রিটিশরা সুপার মার্কেটগুলোর দেশীয় পণ্যের দিকে ঝুঁকছে। সাধারণত এসব পণ্য ব্র্যান্ডেড পণ্যগুলোর চেয়ে সস্তা পাশাপাশি ব্যয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহায়ক। তথ্য বলছে, দেশীয় পণ্যের বিক্রয় বছরওয়ারি ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। সবচেয়ে সস্তা মূল্যের নিজস্ব পণ্যের বিক্রি বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। যখন ব্র্যান্ডেড পণ্যের বিক্রয় বেড়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
যুক্তরাজ্যের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান আলডি এবং লিডল উভয়ই প্রতিষ্ঠানই ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত ১২ সপ্তাহের মধ্যে রেকর্ড বাজার হিস্যা অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজার হিস্যা যথাক্রমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ এবং ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। এর মধ্যে লিডল ছিল সর্বাধিক দ্রুতবর্ধনশীল গ্রোসারি শপ। যার বিক্রয় ২৫ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে আলডির বেড়েছে ২৫ শতাংশ।
ম্যাককেভিট বলেন, ‘গ্রাহক প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে তিনটি বৃহৎ খুচরা দোকানে কেনাকাটা করেন। ডিসকাউন্ট দাতা অপারেটরগুলো এতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।’