২০২২ সালে ৪.৩ লাখ ২০২৪ সালে ৪.৫ লাখের বেশি লোককে স্থায়ী বসবাসের জন্য আমন্ত্রণের পরিকল্পনা করেছে কানাডা। প্রচুর পরিমাণের কর্মীসংকট তৈরি হওয়া এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর আমেরিকার এই দেশটি, যা বাংলাদেশের অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য লোভনীয় সুযোগ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে দুঃখের বিষয়, কানাডায় স্থায়ী বসবাসের প্রধান শর্ত পূরণের জন্য দক্ষ কর্মীর অভাব রয়েছে বাংলাদেশে। অভিবাসন খাতে কর্মরত ব্যক্তিরা বলেছেন যে এই সুযোগ কাজে লাগাতে সক্ষম হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে দক্ষ কর্মী বিকাশের জন্য নিজস্ব কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে।
কানাডায় কর্মীদের উচ্চ চাহিদাযুক্ত খাতগুলো হচ্ছে- স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, খাদ্য পরিষেবা, নির্মাণ, খুচরা বাণিজ্য, পরিবহন, গুদামজাতকরণ এবং শিক্ষাগত পরিষেবা।
বেকারত্বের হারের তুলনায় চাকরীর শূন্য পদ বেশি এবং বিভিন্ন সেক্টরে ক্রমবর্ধমান শ্রমঘাটতি, অভিবাসনের বর্ধিত প্রয়োজনীয়তার দিকে নির্দেশ করেছে কানাডায় সাম্প্রতিক লেবার ফোর্স সার্ভে। আন্তর্জাতিক রিপোর্ট বলছে, দেশটির এখনকার কর্মীবাহিনী অবসরের বয়সে পৌঁছেছে।
কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন নিউজ ওয়েবসাইট সিআইসি নিউজ জানিয়েছে যে দেশটির ৯০ লাখ লোক এই দশকে অবসরের বয়সে পৌঁছাতে চলেছে। এদিকে প্রজনন হার সর্বনিম্নে পৌঁছেছে৷ লেবার ফোর্স সমীক্ষা অনুসারে, বর্তমানে প্রায় ১০ লক্ষ চাকরির শূন্যপদ রয়েছে৷
এক্সপ্রেস এন্ট্রি নামের এক প্রকার আবেদন পদ্ধতিতে কানাডায় স্কিলড ওয়ার্কার হিসেবে যাওয়া যাবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবেদনকারীদের যোগ্যতা অনুযায়ী বাছাই করা হবে। যোগ্য আবেদনকারীদের এক প্রকার স্কোর দেওয়া হবে, যাকে বলা হচ্ছে ‘সিআরএস স্কোর’।
প্রার্থীদের শিক্ষা, ভাষাগত সক্ষমতা, কাজের অভিজ্ঞতা এবং বয়সের মতো বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এই স্কোর দেওয়া হবে। সিআরএস স্কোর যত বেশি হবে, একজন প্রার্থী স্থায়ীভাবে বসবাসের (আইটিএ) আমন্ত্রণ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি হবে, ইমিগ্রেশন কনসালটেন্সি ফার্ম ভিসা এইডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম টিবিএসকে জানিয়েছেন এই তথ্য।
তিনি যোগ করেন, “অনেক বাংলাদেশি কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে ইচ্ছুক, কিন্তু তাদের অধিকাংশেরই প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নেই। গত মাসে অন্তত ১৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী আমাদের ফার্মে এসেছিলেন, কিন্তু তাদের কারোরই আবেদন করার জন্য পর্যাপ্ত যোগ্যতা ছিল না।”
কানাডার রিচমন্ডে কানাডা রেভিনিউ এজেন্সিতে কর্মরত রাজিবুল রাজিব ফোনে টিবিএসকে বলেছেন, “কানাডা তাদের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক দক্ষ লোককে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দিচ্ছে। এই সুযোগগুলির বেশিরভাগই চীন ও ভারতের লোকেরা নিচ্ছে”।
তিনি বলেন, “আইইএলটিএস-এর স্কোরের মতো সহ বিভিন্ন কঠিন অবস্থার কারণে বাংলাদেশিরা এই সুযোগটি সহজে নিতে পারছে না। তবে আপনি যদি একজন ছাত্র হিসাবে এই দেশে আসেন, তবে স্থায়ীভাবে বসবাস করা তুলনামূলকভাবে সহজ”।
“ছাত্ররা দুই থেকে তিন বছরের জন্য ওয়ার্ক পারমিট পায়। শুধুমাত্র এক বছর কাজ করার পর একজন দক্ষ জনশক্তি হিসেবে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারে,” তিনি যোগ করেন।
কানাডায় বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম উল্লেখ করে রাজিবুল বলেন, “ভারতে শিক্ষা লোন পাওয়া খুবই সহজ, যা বাংলাদেশে খুবই কঠিন। সরকারের উচিত এ দিকে নজর দেওয়া। স্টুডেন্ট লোন পাওয়া সহজ হলে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী কানাডায় যেতে পারবে।”
১৯ আগস্ট ২০২২
এনএইচ