11.8 C
London
May 3, 2024
TV3 BANGLA
দক্ষিণ এশিয়া

কাশির জ্ঞানবাপী মসজিদের জায়গাতেও হিন্দু মন্দির ছিল, রায় ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের

ভারতের বারাণসী বা কাশিতে অবস্থিত জ্ঞানবাপী মসজিদের বর্তমান কাঠামো তৈরির আগে ওই জায়গায় একটি হিন্দু মন্দির ছিল বলে এক সমীক্ষার পর জানিয়েছে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বা আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই)।

গত বছর জুলাই মাসে বারাণসী জেলা আদালত এএসআইকে ওই মসজিদ চত্বরে সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল।

এএসআই-এর সেই রিপোর্ট, যা এখন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে জানানো হয়েছে চার মাসের জরিপ, বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ এবং স্থাপত্যের অবশেষ, বৈশিষ্ট্য, নিদর্শন, শিলালিপি, শিল্প ও ভাস্কর্যের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে এটা সহজেই বলা যায় বর্তমান কাঠামো নির্মাণের আগে সেখানে একটা হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল।

এ বিষয়ে মুসলিম পক্ষ জানিয়েছে বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) গভীর রাতে এএসআই রিপোর্টের একটি প্রতিলিপি তারা পেয়েছে। এখন আইনজীবীদের কাছে রয়েছে সেই রিপোর্ট।

জ্ঞানবাপী মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদের যুগ্ম সম্পাদক এস এম ইয়াসিন বলেন, ‘এটা একটা রিপোর্ট, কোনও সিদ্ধান্ত নয়। প্রতিবেদনটা ৮৩৯ পৃষ্ঠার। এর সমীক্ষা ও বিশ্লেষণ করতে সময় লাগবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া হবে। বিবেচনার জন্য আদালতে তোলা হবে।’

মসজিদ কর্তৃপক্ষ মনে করে, সম্রাট আকবরের আমলেরও প্রায় ১৫০ বছর আগে থেকে জ্ঞানবাপী মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন মুসলিমরা।

এস এম ইয়াসিন বলেন, এরপর সব আল্লাহর ইচ্ছা। আমাদের দায়িত্ব মসজিদ সামলানো। হতাশা হারাম। ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে। বিতর্ক এড়িয়ে চলতে আবেদন জানাচ্ছি।

মামলার প্রধান বাদি রাখী সিংয়ের আইনজীবী অনুপম দ্বিবেদির কাছ থেকে ৮০০ পৃষ্ঠারও বেশি প্রতিবেদনের একটি প্রতিলিপি পেয়েছে বিবিসি।

এএসআই-র রিপোর্ট অনুসারে, ‘একটি কক্ষের ভিতরে পাওয়া আরবি-ফার্সি ভাষায় লেখা শিলালিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে মসজিদটি আওরঙ্গজেবের রাজত্বের ২০তম বছরে (১৬৭৬-৭৭) নির্মাণ করা হয়েছিল।’

এতে বলা হয়, ‘এ থেকে বোঝা যায়, সপ্তদশ শতাব্দীতে আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালে আগের যে কাঠামো ছিল তা ভেঙে ফেলা হয় এবং এর কিছু অংশ বদলে ফেলে বর্তমানে যে কাঠামো রয়েছে, সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, এএসআইয়ের এই সমীক্ষায় জ্ঞানবাপী মসজিদের সিল করা ওজুখানার বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা করা হয়নি।

হিন্দু পক্ষের দাবি, ওই ওজুখানায় একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে, যাকে মসজিদের কর্তৃপক্ষ ‘ফোয়ারা’ বলে থাকে।

রাখী সিংয়ের (বাদি পক্ষ) উকিল অনুপম দ্বিবেদি এই সমীক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘এএসআই বলেছে যে আওরঙ্গজেবের মসজিদ নির্মাণের আগে মসজিদ চত্বরে একটি হিন্দু কাঠামো এবং মন্দির ছিল।’

তিনি বলেন, ‘এটা যে আমাদের মামলাকে শক্তিশালী করে তুলবে সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। সাক্ষ্য-প্রমাণের দিক থেকে এটি মামলাগুলোর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

‘হিন্দু মন্দিরে’র আকারের কাঠামো
জ্ঞানবাপীতে বিদ্যমান কাঠামোর প্রকৃতি এবং সময় সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিয়ে এএসআই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিদ্যমান স্থাপত্যের অবশেষ, দেওয়ালে সাজানো অংশ, কেন্দ্রীয় কক্ষের কর্ণ রথ এবং প্রতিরথ, পশ্চিম কক্ষের পশ্চিম দেয়ালের তোরণ-সহ একটা বড় প্রবেশদ্বার, অলংকরণের ভেতরে এবং খোদাই করা পাখি এবং প্রাণীর চিত্র থেকে বোঝা যায় যে পশ্চিম দেয়ালটা হিন্দু মন্দিরের অবশিষ্ট অংশ।’

এতে আরো বলা হয়, ‘শিল্প ও স্থাপত্যের উপর ভিত্তি করে, আগে থেকে উপস্থিত ওই কাঠামোকে হিন্দু মন্দির হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।’

বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের পর বলা হয়েছে বিদ্যমান কাঠামো নির্মাণের আগে সেখানে একটি বড় হিন্দু মন্দির ছিল।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
২৮ জানুয়ারি ২০২৪

আরো পড়ুন

পশ্চিমবঙ্গের তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করবেন আদানি

শুরু হতে যাচ্ছে রুপি-রুবেল বাণিজ্য

ভারতে ঝুলন্ত সেতু ধসে নিহত ১৪১