সিরিয়ার শরণার্থীসহ আশ্রয়প্রার্থীদের আগমনের দশ বছর পূর্তিতে অভিবাসন নীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউর অভিবাসন কমিশনার মাগনুস ব্রুনার স্পষ্ট করেছেন, সীমান্ত অতিক্রম করে কে ইউরোপে প্রবেশ করতে পারবেন আর কে পারবেন না—সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শুধু ইউরোপেরই।
ইউরোপীয় নিউজরুমকে দেওয়া এক লিখিত সাক্ষাৎকারে ব্রুনার জানান, ২০১৫ সালের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইইউ এখন একটি আধুনিক অভিবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলছে। তিনি বলেন, “গত দশ বছরে স্পষ্ট হয়েছে যে, অভিবাসন ইস্যু মোকাবিলা করতে হলে ইইউর ২৭টি দেশকে একসাথে কাজ করতে হবে।” তার দাবি, নতুন নীতির মাধ্যমে পুনরায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
অভিবাসন ব্যবস্থার সংস্কারের অংশ হিসেবে ২০২৬ সালের জুন থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে “প্যাক্ট ফর মাইগ্রেশন অ্যান্ড অ্যাসাইলাম”। এর আওতায় অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের প্রত্যাবাসন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা জোরদার করা এবং যেসব তৃতীয় দেশ থেকে অভিবাসীরা ইউরোপে প্রবেশ করেন তাদের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানো হবে। ব্রুনার উদাহরণ দেন যে, সহযোগিতার ফলে বলকান রুটে অনিয়মিত অভিবাসন ২০২২ সালের পর থেকে ৯৫% এবং ভূমধ্যসাগরীয় পথে ৬০% কমেছে।
সীমান্তে সহিংস আচরণের অভিযোগ প্রসঙ্গে ব্রুনার বলেন, মানবিকতা ও মৌলিক অধিকার রক্ষাই ইউরোপের মৌলিক পরিচয়। সীমান্তে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তায় ফ্রন্টেক্সের কার্যক্রম বাড়ানো হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
ভবিষ্যতের কৌশল প্রসঙ্গে কমিশনার জানান, আলবেনিয়া বা টিউনিশিয়ার মতো বাইরের দেশে আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার বিষয়টি একক সমাধান নয়। বরং টেকসই পরিবর্তনের জন্য সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিমুখী চুক্তি ও শক্তিশালী আইনি কাঠামোই হবে মূল ভরসা।
এদিকে ইউরোপের কিছু দেশে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব বাড়লেও ব্রুনারের মতে, জনগণের আস্থা পুনর্গঠনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তিনি বলেন, “মানুষকে বুঝতে হবে, অভিবাসন নীতির উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কে প্রবেশ করবে, কে বের হয়ে যাবে—সে বিষয়ে স্পষ্ট নীতি প্রণয়ন করতে হবে।”
ব্রুনার জোর দিয়ে বলেন, অভিবাসন নীতিকে রাজনৈতিক বিতর্কের বাইরে এনে প্রমাণভিত্তিক সমাধান দিতে হবে। এজন্য কমিশন, সদস্য রাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
সূত্রঃ ইনফোমাইগ্র্যান্টস
এম.কে
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫