12.2 C
London
May 3, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

ক্রসফায়ারের আগে পরিবারকে কবর খুঁড়তে বলতেন ওসি প্রদীপ

কথিত বন্দু যুদ্ধে নিহত আব্দুর রহমানের স্ত্রী (ডানে)

মেজর সিনহা হত্যার অভিযোগে গেফতার কক্সবাজার টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ গেফতার পর থেকে একের পর বের হতে থাকে এই পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে। প্রথমে ওসি প্রদীপের সম্পত্তির পাহার নজরে আনে মিডিয়া, এরপর তুলে ধরা হচ্ছে তার ‘ক্রস ফায়ার বাণিজ্যে’র কথা। অনেকের অভিযোগ বিনা অপরাধে তিনি মানুষদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে কথিত ‘ক্রসফায়ার’ নাম দিয়ে হত্যা করতেন। আরও অভিযোগ রয়েছে, এসব কাজে তাকে সহযোগিতা করত টেকনাফ থানার অন্য সহকর্মীরাও।

মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সময় টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে কয়েকজন অভিযোগকারীর বক্তব্য তুলে ধরা হয়। তাদের একজনের অভিযোগ, গভীর রাতে ঘুম থেকে তুলে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যান ওসি প্রদীপ। আর যাওয়ার মুহূর্তে পরিবারের বাকি সদস্যদের কবর খুঁড়ে রাখতে বলে দেন।

টেকনাফের টেকের পাড়ায় পরের জমিতে ঘর তুলে থাকতেন রাজমিস্ত্রী আব্দুর রহমান। ২০১৯ সালের ২৫ জুন ‘দলবল’ নিয়ে তার বাড়িতে আসেন তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাস। তার স্ত্রীকেই এই কবর খুঁড়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

আব্দুর রহমানের স্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, উনারা ছিল ৬-৭ জনের মতো। সেখানে ওসি প্রদীপও ছিল। এসে আমার স্বামীকে ঘুম থেকে উঠিয়ে মারধোর শুরু করে। এরপর লুঙ্গি ‘কুঁচা দিয়ে ধরে’ নিয়ে যায়। স্বামিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন জিজ্ঞেস করায় বলে, তোমাদের বাড়ির আশেপাশে যদি কবরস্থান থাকে তাহলে খুঁড়ে রেখো। তোমার স্বামীকে আমরা মেরে ফেলব।

এর আগে বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পুলিশ সূত্র দিয়ে বলা হয়, শুধু টেকনাফেই গত ২২ মাসে প্রদীপের আমলে তার হাতে ১৪৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মারা গেছে ২০৪ জন। তাদের অর্ধেকের বেশি লাশ পড়েছিল স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভে।

যারা তার হাতে মারা গেছে, তাদের পরিবারগুলোও বর্তমানে নিঃস্ব হয়ে গেছে। যাকে ক্রসফায়ার করা হতো, তাকে ক্রসফায়ারের আগে অন্তত ১০ থেকে ১২ দিন থানা হাজতে রাখা হতো। এমন ঘটনাও রয়েছে মাসের পর মাস হাজতেই রাখা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে থানা হাজতে থাকা ব্যক্তির পরিবার পরিজনের কাছ থেকে ক্রসফায়ার না দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আদায় করা হতো লক্ষ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি স্বর্ণালংকার। কিন্তু শেষ সম্বল পর্যন্ত প্রদীপের হাতে তুলে দিয়েও বাঁচতে পারেনি অনেকেই।

সবমিলিয়ে ওসি প্রদীপ যেন ছিলেন আতংকের নাম। টেকনাফের এ আতংকের আপাতত অবসান হয় ৩১ জুলাই তার অন্যতম সহযোগী ইন্সপেক্টর লিয়াকতের হাতে সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায়। ৫ আগস্ট ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি ও ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ২নং আসামি করে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড হয়।

মামলার অন্য আসামিরা হল এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এসআই টুটুল ও কনস্টেবল মো. মোস্তফা।

এসব বিষয় নিয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, যদি ঘটনার পর কোন ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ করত তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হতো।



১১ আগস্ট ২০২০
এনএইচটি

আরো পড়ুন

ধর্ষণ নিয়ে সালিশকে ফৌজদারি অপরাধ গণ্য করতে রিট আবেদন

অনলাইন ডেস্ক

রাজা চার্লসের অভিষেক কুচকাওয়াজে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ১০ সদস্য

দেশী কোচ ও মাশরাফিকে নিয়েই সিলেট স্ট্রাইকারের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন

নিউজ ডেস্ক