22.6 C
London
June 12, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ক্ষতিপূরণের ফাঁদে ব্রিটেনের মাদার অ্যান্ড বেবি হোমের বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীরা

আয়ারল্যান্ডের মাদার অ্যান্ড বেবি হোমে নির্যাতনের শিকার হয়ে বেঁচে যাওয়া হাজার হাজার ভুক্তভোগী ব্রিটেনে এখন নতুন এক দুঃসহ বাস্তবতার মুখোমুখি। আয়ারল্যান্ড সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করলে তারা যুক্তরাজ্যের প্রয়োজনীয় মিনস-টেস্টেড ভাতা হারাতে পারেন — এমন আশঙ্কায় আবারও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছেন এই মানুষগুলো।

বিষয়টি নিয়ে ওয়েস্টমিনস্টারে সম্প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। লেবার এমপি লিয়াম কনলনের নেতৃত্বে এক প্রচারণায় ব্রিটেনের সব বড় রাজনৈতিক দল ও প্রায় ১০০ জন এমপি এবং লর্ডস একজোট হয়ে দাবি তুলেছেন— ক্ষতিপূরণ যেন ভুক্তভোগীদের ভাতা পাওয়ার পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, “যেখানে এই ক্ষতিপূরণ একটি ক্ষমার প্রতীক হতে পারত, সেখানে তা এখন জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

বর্তমানে আয়ারল্যান্ড সরকারের মাদার অ্যান্ড বেবি ইনস্টিটিউশন পেমেন্ট স্কিম থেকে পাওয়া অর্থ ব্রিটিশ আইনে ব্যক্তির সঞ্চয় হিসেবে ধরা হয়। ফলে এই অর্থ পেলে অনেকেই ইউনিভার্সাল ক্রেডিট, পেনশন ক্রেডিট বা সোশ্যাল কেয়ার সাপোর্ট হারাতে পারেন।

এই পরিস্থিতির সমাধানে প্রস্তাবিত হয়েছে “ফিলোমেনা’স ল’”— একটি আইন যা ক্ষতিপূরণকে সঞ্চয় হিসেবে না গন্য করার জন্য ‘ইনডেফিনিট ক্যাপিটাল ডিসরিগার্ড’ কার্যকর করবে। এটি এর আগে ৭/৭ বোমা হামলা, ম্যানচেস্টার হামলা এবং উইন্ডরাশ স্ক্যান্ডাল ভুক্তভোগীদের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনটির নাম এসেছে ফিলোমেনা লি-এর নাম থেকে, যিনি মাদার অ্যান্ড বেবি হোমে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছিলেন এবং যার কাহিনি অবলম্বনে তৈরি হয় বিখ্যাত চলচ্চিত্র “Philomena”।

ফিলোমেনা বলেন, “ক্ষতিপূরণ আমাদের বেদনার সবটা ফিরিয়ে দিতে পারে না, তবে এটা একটি জবাবদিহিতা। এটা আমাদের স্বীকৃতি।”

এই ইস্যুতে মঙ্গলবার ওয়েস্টমিনস্টার হল-এ অনুষ্ঠিত বিতর্কে ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনসের মন্ত্রী অ্যান্ড্রু ওয়েস্টার্ন জানান, ব্রিটিশ সরকার এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আইরিশ সরকারের সাথেও আলোচনা চলছে।

এই মুহূর্তে প্রায় ১৩,০০০ ভুক্তভোগী ব্রিটেনে বসবাস করছেন, যাদের অনেকে ক্ষতিপূরণের যোগ্য হলেও শুধুমাত্র ভাতা হারানোর ভয়ে আবেদন করতে সাহস পাচ্ছেন না।

প্রচারকারীদের বক্তব্য, ব্রিটিশ সরকার যদি জরুরি ভিত্তিতে এই আইন পরিবর্তন না করে, তবে এটা হবে নির্যাতিতদের প্রতি দ্বিতীয়বার অবিচার — যেখানে একবার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে তাদের লাঞ্ছনা করা হয়েছিল, এবার রাষ্ট্রের নিয়মের ফাঁদে ফেলছে তাদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার মৌলিক অধিকার।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১১ জুন ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যের কাউন্সিলগুলোকে জমি অধিগ্রহণের ক্ষমতা দিচ্ছে সরকার

How to Become A landlord

নিউজ ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের সুপারমার্কেটগুলোয় একই পণ্য ভিন্ন দামে বিক্রি!

নিউজ ডেস্ক