গত চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক খরার কবলে পড়েছে জিম্বাবুয়ে। মঙ্গলবার দেশটির বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খরার কারণে যেসব লোকবসতি তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েছে তাদের খাদ্য জোগাতে ২০০ হাতি বাছাই করা হবে।
রয়টার্স জানিয়েছে, এবার এল নিনোর প্রভাবে সৃষ্ট খরায় আফ্রিকার দক্ষিণ অংশের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। পুরো অঞ্চলজুড়ে প্রায় ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের পার্ক এবং বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র টিনাশে ফারাও রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা নিশ্চিত করছি যে, সারা দেশ থেকে প্রায় ২০০ হাতি বাছাই করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা কীভাবে সেটি করব, তার ছক কষছি।’ টিনাশে জানান, বাছাই করা হাতিগুলোর মাংস জিম্বাবুয়ের খরাপীড়িত অঞ্চলগুলোর মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ১৯৮৮ সালের পর এবারই প্রথম জিম্বাবুয়ের কয়েকটি জেলায় হাতি নিধনের এই অভিযানটি পরিচালনা করা হবে। এর আগে গত মাসেই দেশটির প্রতিবেশী নামিবিয়ায় ৮৩টি হাতি মেরে খরাপীড়িত অঞ্চলগুলোতে বিতরণ করা হয়েছিল।
আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় পাঁচটি দেশ—জিম্বাবুয়ে, জাম্বিয়া, বতসোয়ানা, অ্যাঙ্গোলা এবং নামিবিয়া জুড়ে বিস্তৃত একটি সুবিশাল সংরক্ষিত অঞ্চলে বর্তমানে ২ লাখের বেশি হাতি বাস করে বলে ধারণা করা হয়।
টিনাশে জানান, হাতি অধ্যুষিত অঞ্চলটির যে অংশ জিম্বাবুয়েতে পড়েছে, সেই অংশ থেকে হাতির ঘনত্ব কমানোও তাদের প্রচেষ্টার অংশ। এই অঞ্চলটি ৫৫ হাজার হাতি বসবাসের উপযুক্ত হলেও সেখানে এখন প্রায় ৮৪ হাজার হাতি বসবাস করছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, এই ধরনের একটি গুরুতর খরা পরিস্থিতি মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর মধ্যে সংঘর্ষকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। কারণ এই সময়টিতে খাদ্য এবং সম্পদের সংকট দেখা দেয়। গত বছর হাতির হামলায় জিম্বাবুয়েতে ৫০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
জিম্বাবুয়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রচেষ্টা এবং হাতি জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রশংসিত। তবে বর্তমানে দেশটি হাতির দাঁত এবং জীবিত হাতির বাণিজ্য আবার চালু করার জন্য জাতিসংঘের কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেঞ্জারড স্পেসিসের (CITES) কাছে তদবির করছে।
সূত্রঃ রয়টার্স
এম.কে
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪