যুক্তরাজ্যের লর্ড চ্যান্সেলর শাবানা মাহমুদ গুরুতর যৌন অপরাধীদের জন্য যৌন ইচ্ছা কমানোর ওষুধ বাধ্যতামূলক করার চিন্তা করছেন। কারাগারের ভিড় কমানো এবং সমাজে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি একটি নতুন উদ্যোগ হতে পারে বলে জানিয়েছে সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্র।
বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডে কিছু কারাগারে পরীক্ষামূলকভাবে এই ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে দেখা গেছে, অপরাধীদের মধ্যে যৌন চিন্তা ও আগ্রাসী আচরণ অনেকটা কমে যায়।
এই প্রকল্প আরও ২০টি এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, এবং ভবিষ্যতে এটি সারা দেশেই চালু করা হতে পারে।
এই চিকিৎসায় কী হয়?
এই পদ্ধতিতে অপরাধীদের এমন ওষুধ দেওয়া হয় যা শরীরের টেস্টোস্টেরন নামের হরমোন কমিয়ে দেয়। এর ফলে যৌন ইচ্ছা ও আগ্রাসী চিন্তা অনেক কমে যায়।
এছাড়াও একটি ওষুধ (SSRI) দেওয়া হয়, যা মানসিকভাবে যৌন চিন্তা কমাতে সাহায্য করে।
এই ওষুধের সঙ্গে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কাউন্সেলিংও চালানো হয়, যাতে অপরাধীরা মন বদলাতে পারে।
আর কী কী পরিবর্তন আসছে?
*শুধু যৌন ইচ্ছা কমানোর ওষুধ নয়, আরও কিছু বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যুক্তরাজ্যের কারাগারে:
*হত্যা বা ধর্ষণের মতো বড় অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের সাজার অর্ধেক পার হলে ইলেকট্রনিক ট্যাগ পরে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
*যারা জেলে ভালো আচরণ করছে, তাদের সাজার এক-তৃতীয়াংশ পরেই ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব।
*ছোট অপরাধে জেল না দিয়ে জরিমানা বা অন্য শাস্তির ব্যবস্থা করা।
*নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে বিশেষ আদালত এবং আরও নজরদারি ব্যবস্থা নেওয়া।
এই পরিকল্পনাগুলো এসেছে ডেভিড গকের নেতৃত্বে গঠিত এক বিশেষ কমিটির রিপোর্ট থেকে। কমিটি ৪৮টি সুপারিশ দিয়েছে, যার মধ্যে যৌন ইচ্ছা কমানোর ওষুধ সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।
পুলিশ এবং বিচার সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো বলছে, এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত অর্থ ও প্রযুক্তি দরকার। না হলে বিপদ বাড়তে পারে। হাওয়ার্ড লিগ নামের একটি আইন সংস্কার গ্রুপ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
তবে কনজারভেটিভ পার্টি এই পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, “এভাবে চললে অপরাধীদের সাহস আরও বেড়ে যাবে।”
শাবানা মাহমুদের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের বিচারব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। যৌন অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ওষুধের ব্যবহার যেমন সাহসী উদ্যোগ, তেমনি এর কার্যকারিতা, জনমত ও বাস্তবায়নের দিকও খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২২ মে ২০২৫