সিলেটের তারাপুর চা বাগানের হাজীপাড়া এলাকায় চা শ্রমিকদের ব্যবহৃত জায়গা ও রাস্তা স্থানীয় একটি পক্ষের কাছে লিজ দেওয়ার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন চা শ্রমিকেরা।
বাংলাদেশ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, বাগানের চা শ্রমিকদের পঞ্চায়েত কমিটিকে না জানিয়ে সেবায়েত পংকজ গুপ্ত শংকর শ্রমিকদের দখলে থাকা প্রায় ১০ শতক জায়গা লিজ দিয়েছেন। লিজ দেওয়া জায়গার মধ্যে শ্রমিকদের যাতায়াতের রাস্তাও রয়েছে।
লিজ নেওয়া পক্ষ ওই জায়গায় ঘর তুলতে শুরু করেছেন। গত শনিবার (৮ আগস্ট) বিষয়টি জানতে পেরে কর্মবিরতিতে যান চা শ্রমিকরা।
জানা যায়, তারাপুর চা বাগান এর আগেও দখলদারদের খপ্পরে পড়েছিল। ২০১৯ সালের আগস্টে ইত্তেফাকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, তারাপুরের দুসকি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় চা-ভূমি দখল করে নির্মাণ করা হয় শতাধিক স্থাপনা। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রশাসন।
আলোচিত এই তারাপুর চা বাগান দীর্ঘ ২৫ বছর শিল্পপতি রাগীব আলীর দখলে ছিল। ২৫ বছর পর ২০১৬ সালে আদালতের নির্দেশে সেবায়েত পংকজ গুপ্তকে ৪২২ একর আয়তনের এই চা বাগান বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
চা বাগানটির আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। তবে এই ভূমি এখনও বিভিন্ন গোষ্ঠী দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি শ্রমিকদের দখলে থাকা জমি গোপনে লিজ দেওয়ার ঘটনা এসবেরই ধারাবাহিকতা বলে অভিযোগ করতে দেখা যায় শ্রমিকদের। বিষয়টির নিষ্পত্তি চাইছেন তারা।
বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার সন্ধ্যার পর চা শ্রমিকদের পঞ্চায়েত কমিটির সাথে সেবায়েত পংকজ গুপ্ত বসবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তার আশ্বাস বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে রোববার (৯ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা।
তারাপুর বাগানের চা শ্রমিকদের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চৈতন্য মোদী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের না জানিয়ে এ জায়গা অন্যকে লিজ দিতে পারেন না সেবায়েত। এটি অন্যায়।
আমরা উনার সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেননি, দেখাও করেননি। তাই আমরা বিক্ষোভ করছি এবং কর্মবিরতি পালন করছি।
এ প্রসঙ্গে চা বাগানের ব্যবস্থাপক বিজয় কান্তি দে বলেন, জায়গাটি লিজ দেয়া হয়নি। স্থানীয় সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। বাগান কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নগরীর বিমানবন্দর থানায় মামলা করেছে।
১২ আগস্ট ২০২০
বিশেষ প্রতিনিধি (সিলেট)
এমকেসি/ এনএইচটি