‘টুইটার হত্যাকারী’ বলে অভিহিত সিরিয়াল কিলার তাকাহিরো শিরাইশি্কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন জাপানের আদালত। টুইটারে একে একে নয় জনের সাথে যোগাযোগ করে তাদের খুন করেন ৩০ বছর বয়সী এই যুবক।
জাপানসহ পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছে এই মামলা। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আদালতে জনসাধারণের জন্য মাত্র ১৬ টি আসন থাকলেও মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) এই বহুল আলোচিত রায়টি দেখতে ৪৩৫ জন লোক উপস্থিত হয়েছিলেন।
তাকাহিরো শিরাইশি্কে ২০১৭ সালে গ্রেপ্তার করা হয়। তার ফ্ল্যাটে মৃতদের দেহের অংশ পাওয়া গেছে। ২৪০ টিরও বেশি হাড় পাওয়া যায় সেখানে। সাথে নয়টি মানুষের মাথা। বিভিন্ন বক্সে এসব হাড় ছিলো। এছাড়া বিড়ালের মলের সঙ্গে তিনি এই হাড়গুলো লুকিয়ে রেখেছিলেন যাতে কেউ খুঁজে না পায়।
নয় জনকে খুনের কথা স্বীকার করলেও তাকাহিরো শিরাইশি সাফ জানায়, প্রত্যেকের ‘সায়’ ছিল বলেই তাদের খুন করেছে সে। নিহতেরা কখনও না কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় আত্মহত্যা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
জাপানের জাতীয় সংবাদমাধ্যম এনএইচ জানায়, বিচারক নাউকুনি ইয়ানো বলেছেন, মৃতদের কারোই মৃত্যুর ব্যাপারে কোনো সম্মতি ছিল না। এটা গভীর দুঃখের ব্যাপার যে নয় জনের জীবন কেড়ে নেওয়া হলো। তিনি এই খুনের ঘটনাকে ইতিহাসের চরম বিদ্বেষপূর্ণ একটি ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
আত্মহত্যাপ্রবণ নারীদের টুইটার ব্যবহার করে নিজের বাড়িতে আসতে প্রলুব্ধ করতো তাকাহিরো শিরাইসি। বলতো মরতে তাদের সাহায্য করতে পারবে সে। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে নিজেও মারা যাবে বলে জানাতো। এভাবে ২০১৭ সালের আগস্ট ও অক্টোবরে কম বয়সী আট নারী ও এক পুরুষকে গলা টিপে হত্যা করে দেহ টুকরো টুকরো করে কাটে এই খুনি।
যে পুরুষকে হত্যা করা হয়েছে তিনি এক মহিলা ভুক্তভোগীর প্রেমিক। প্রেমিকার খোঁজ করতে যেয়ে ‘টুইটার হত্যাকারীর’ শিকার হন তিনি।
এদিকে ২০১৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা প্রবণ দেশগুলোর একটি ছিল জাপান। পরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও করোনাকালের লকডাউনের মধ্যে জাপান আত্মহত্যায় নতুন রেকর্ড করেছে।
আত্মহত্যা বন্ধ করতে কি করতে পারে তাই নিয়ে চিন্তিত জাপান সরকার । সেই সাথে আত্মহত্যা নিয়ে আলোচনা করা ওয়েবসাইটগুলো সম্পর্কে আলোচনা শুরু করেছে সরকার। নতুন বিধি প্রবর্তন করতে পারে দেশটি।
সূত্র: বিবিসি
১৫ ডিসেম্বর ২০২০
এসএফ