পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের চরম অব্যবস্থাপনার কারণে ৯০ বছর বয়সী বিধবা জুন অলি একের পর এক পার্কিং জরিমানার কবলে পড়ে এখন পর্যন্ত এক হাজার পাউন্ডেরও বেশি অর্থ জরিমানা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
ওয়াপিংয়ের বাসিন্দা জুন গত নভেম্বরেই তার ব্লু ব্যাজ নবায়নের আবেদন করেন। তখনই তাকে জানানো হয়েছিল যে, নতুন ব্যাজ পেতে সর্বোচ্চ ১২ সপ্তাহ লাগতে পারে। কিন্তু সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কাউন্সিল তার ব্যাজ নবায়ন করেনি, বরং জরিমানার চিঠি পাঠাতে ব্যস্ত থেকেছে।
জুন, যিনি হাঁটতে গেলেই নিঃশ্বাসে কষ্ট পান, বলেন— তার গাড়িই এখন জীবনের একমাত্র ভরসা। তিনি এটি ব্যবহার করে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করেন, প্রতিবেশীদের হাসপাতালে নিয়ে যান বলে জানান।
ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ না থাকায়, তার ভাড়াটে — একজন ইউক্রেনীয় শরণার্থী — তার হয়ে আবেদনটি জমা দেন। এরপর থেকে বারবার চেষ্টা করেও কাউন্সিল থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।
কাউন্সিল দাবি করেছে, তারা মার্চ ও জুনে চিঠি পাঠিয়েছে। কিন্তু জুন বলেন, তার ঠিকানায় কোনো চিঠিই আসেনি, যদিও সেখানে ২৪ ঘণ্টা পোর্টার সার্ভিস রয়েছে।
চিকিৎসকের কাছে প্রতিবন্ধিতা নিশ্চিত করতে বলা হলে জানানো হয়, কাউন্সিলকেই আগে নির্ধারিত ফর্ম পাঠাতে হবে। ফলে জুন কার্যত আটকে পড়েছেন এক জটিল প্রশাসনিক ফাঁদে।
গত ছয় মাস ধরে গাড়ির জানালায় মেয়াদোত্তীর্ণ ব্যাজ লাগিয়ে ব্যাখ্যামূলক একটি নোট দিয়েছেন জুন, কিন্তু বেশিরভাগ ট্রাফিক ওয়ার্ডেন তা উপেক্ষা করেই জরিমানা দিয়েছেন।
জুন বলেন, “আমি কোনও নিয়ম ভাঙতে চাইনি, কিন্তু কাউন্সিলের নিরবতায় আমি অসহায়। জরিমানাগুলো দিচ্ছি কারণ ঘরে বসে থাকতে পারি না। বাইরের জগত আমার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুব দরকার।”
তার ছেলে নতুন করে আবেদন জমা দিলেও এখনো ব্যাজ হাতে পাননি জুন।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা দুঃখিত। প্রয়োজনীয় প্রমাণ না আসায় আমরা আবেদনের অগ্রগতি করতে পারিনি। তবে এখন নতুনভাবে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দ্রুত সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে— টাওয়ার হ্যামলেটসের প্রশাসনিক ব্যর্থতা কীভাবে একজন প্রবীণ নাগরিকের স্বাধীন চলাচল, সামাজিক জীবন ও সম্মানকে বিপন্ন করতে পারে। এই ব্যর্থতা শুধু একটি ব্যাজ নয়, এক জীবনের মর্যাদাকেই চ্যালেঞ্জ করছে।
সূত্রঃ মেট্রো
এম.কে
২০ জুন ২০২৫