TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কারোপঃ চ্যালেঞ্জ নাকি সুযোগ বাংলাদেশের জন্য?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বাংলাদেশসহ একাধিক দেশের পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের উপর প্রায় ৫২% পর্যন্ত অতিরিক্ত ট্যাক্স আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে, যা দেশের তৈরি পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য রপ্তানিনির্ভর খাতে বড় ধাক্কা দিতে পারে।

জরুরি বৈঠকে সরকারের উদ্বেগঃ

বাংলাদেশ সরকার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। ইতোমধ্যে এক জরুরি বৈঠক শেষে জানানো হয়েছে, দুটি কূটনৈতিক চিঠি প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা আমেরিকান প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। এতে শুল্ক আরোপের প্রভাব ও বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের (WTO) মাধ্যমে কূটনৈতিক চাপ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।

শুল্কারোপঃ কেবল ক্ষতির নয়, সুযোগও হতে পারে-

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক আরোপের নীতিটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই নয়, বরং চীন, ভারত, ভিয়েতনামসহ প্রায় সব রপ্তানিকারক দেশেই প্রযোজ্য হচ্ছে। ফলে একমাত্র বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এমন নয়। এর মানে, প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র এখনো তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের করণীয় কী?

যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প বাজার খোঁজা:
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে রপ্তানি সম্প্রসারণে সরকারকে আরও সক্রিয় হতে হবে।

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি করা:
ইউএসএ’র সঙ্গে Bilaterial Trade Agreement (BTA) বা Free Trade Agreement (FTA) চুক্তির বিষয়টি পুনরায় উত্থাপন করা যেতে পারে।

রপ্তানিপণ্য বৈচিত্র্য আনা:
শুধু তৈরি পোশাক নয়, আইটি, কৃষিপণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়া ও প্লাস্টিক পণ্যের মতো অন্যান্য খাতে সরকারী সহায়তা ও প্রণোদনা বৃদ্ধি করতে হবে।

উৎপাদন খরচ কমিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা:
গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং লজিস্টিক খাতে সহায়তা বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমাতে হবে, যাতে অতিরিক্ত শুল্ক সত্ত্বেও মূল্য প্রতিযোগিতায় থাকা যায়।

WTO এবং আন্তর্জাতিক মিত্রদের মাধ্যমে কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি: আমেরিকার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফোরামে সমন্বিত কূটনৈতিক উদ্যোগ চালানো এখন সময়ের দাবি বলে জানিয়েছে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন শুল্কারোপ বাংলাদেশের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে উদ্বেগের কারণ, তবে সঠিক কৌশল ও সময়োপযোগী উদ্যোগ নিলে এটি একটি পুনর্গঠন ও বাজার বৈচিত্র্যের সুযোগ হিসেবেও কাজ করতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এম.কে
০৭ এপ্রিল ২০২৫

আরো পড়ুন

ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার, কার্যালয় স্থাপনের সম্ভাবনা

শেখ হাসিনা দিল্লিতে, যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া নিয়ে যে জটিলতা

সিলেটে ডাক্তার করল কিডনি চুরি

নিউজ ডেস্ক