বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো ডেঙ্গুর চারটি ধরনের বিরুদ্ধেই উপযোগী টিকা নিয়ে সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষাটি করেছেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের গবেষকরা। পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে, ডেঙ্গুর চারটি ধরনের বিরুদ্ধেই এই টিকা অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাফল্য দেখিয়েছে।
২৮ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় আইসিডিডিআরবি। গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি ‘দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নালে’ প্রকাশিত হয়েছে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
ডেঙ্গুর এই টিকার নাম দেওয়া হয়েছে টিভি-০০৫। এটি এক ডোজের টিকা।
আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গবেষণায় ব্যবহৃত এক ডোজের ডেঙ্গু টিকা টিভি-০০৫ মূল্যায়ন করে দেখা যায়, এটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রয়োগের জন্য নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম।
গবেষকরা ২০১৬ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের ১১২ জন স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণকারীকে চারটি ভাগে ভাগ করে ৩:১ অনুপাতে টিভি-০০৫ টিকা বা প্লাসিবো দিয়েছেন বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এর পরের তিন বছর পর্যন্ত অংশগ্রহণকারীদের পর্যবেক্ষণ করা হয়। টিকা দেওয়ার পরে বেশিরভাগ স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে চারটি ডেঙ্গুর সেরোটাইপের অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে।
যারা আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ বেশি পাওয়া গিয়েছে। যদিও গবেষণাটি কার্যকারিতা মূল্যায়ন করার জন্য ডিজাইন করা হয়নি, তবে এখন পর্যন্ত টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ডেঙ্গু সংক্রমণের কোনো ঘটনা শনাক্ত করা যায়নি বলে জানানো হয় আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞপ্তিতে।
আইসিডিডিআরবি জানায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির মৃদু লক্ষণে জ্বর এবং হাড়ের ব্যথা হয় এবং গুরুতর ক্ষেত্রে শক, রক্তপাত এবং অনেকক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটে। যেকোনো সেরোটাইপই মানুষকে অসুস্থ করতে পারে। তবে অন্য কোনো সেরোটাইপ দিয়ে দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এর আকার ও তীব্রতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এ বছরের চলমান ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুতর। বাংলাদেশে এ বছর এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৬ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।
এম.কে
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩