ইউরোপ সমগ্র পৃথিবীর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে। ইউরোপীয় জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের একটি নতুন প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। ইউরোপের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস এবং জাতিসংঘের অনুমান অনুসারে গত ২০ বছরে মহাদেশে তাপজনিত মৃত্যুর সংখ্যা কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার হোসে আলভারো সিলভা বলেছেন, ‘মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব শহরগুলিতে আরও স্পষ্ট হয়, যেখানে বেশিরভাগ মানুষ বাস করে।’ জনসংখ্যা কেবল শহুরে এলাকায় কেন্দ্রীভূত নয়। শহরগুলি গ্রামীণ এলাকার তুলনায় দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে কারণ বিল্ডিং এবং রাস্তাগুলি দীর্ঘ সময়ের জন্য গরম থাকে।
সম্প্রতি প্রকাশিত ইউরোপিয়ান স্টেট অফ দ্য ক্লাইমেট রিপোর্টে বলা হয়, গত বছর ইউরোপে আবহাওয়ার চরম দিকগুলি দেখা গিয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ও ইইউ’র কপারনরিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সিথ্রিএস) মিলে যৌথভাবে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এই সিথ্রিএস-এর পরিচালক কার্লো বুয়োনতেমপো বলেন, ‘২০২৩ সালে ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল দেখি আমরা, দেখি সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত, সবচেয়ে উষ্ণ প্রবাহ ও ব্যাপক বন্যা।’ ইউরোপের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ তিনটি বছরই ২০২০ সালের পরের সময়ে। সবচেয়ে বেশি গরম পড়ে যে দশটি বছরে, তাও ২০০৭ সালের পরেই।
ইন্টারন্যাশনাল ডিজাস্টার ডেটাবেস জানাচ্ছে, গত বছর বন্যায় প্রাণ হারান ৪০ জন, ঝড়ে মারা যান ৬৩ জন ও ৪৪ জনের মৃত্যু হয় দাবানলের কারণে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ইউরোর ক্ষতি হয়। এর ৮০ শতাংশের জন্য দায়ী সর্বগ্রাসী বন্যা। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সেক্রেটারি জেনারেল সেলেস্তে সাওলো বলেন, ‘এই প্রজন্মের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জলবায়ু সংকট। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার খরচ হয়তো বেশি, কিন্তু মোকাবিলা না করার দাম আরো অনেক চড়া।’
২০২৩ সালের জুলাই মাসে, দক্ষিণ ইউরোপের প্রায় ৪১ শতাংশ এলাকার মানুষের মধ্যে কড়া, অতি কড়া ও চরম ‘হিট স্ট্রেস’ পরিলক্ষিত হয়। মানুষের শরীরে দাবদাহের প্রভাবকে বলে ‘হিট স্ট্রেস’। দীর্ঘ সময় ধরে ‘হিট স্ট্রেস’-এর মধ্য দিয়ে গেলে, তা শরীরে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে। তবুও, সাধারণ মানুষ ও অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীরাও এই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেন না।
সূত্রঃ এনপিআর
এম.কে
২৪ এপ্রিল ২০২৪