সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিয়াদ ও তেল আবিবের মধ্যে দেখা গেছে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার নানা প্রক্রিয়া। তারই ধারাবাহিকতায় সৌদি আরবের শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুলের নতুন পাঠ্যপুস্তকে ইসরায়েল এবং ইহুদিবাদের প্রতি তাদের দেশের অবস্থানকে নরম করেছে বলে জানা গেছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোতে শিক্ষামূলক পাঠ্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে ইসরায়েলভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা দ্য ইনস্টিটিউট ফর মনিটরিং পিস অ্যান্ড কালচারাল টলারেন্স ইন স্কুল এডুকেশন (ইমপ্যাক্ট-এসই)। গত সপ্তাহে সংস্থাটির প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তকগুলোতে ইসরায়েল ও ইহুদিবাদের প্রতি তাদের অবস্থান পাল্টিয়েছে সৌদি আরব। জায়নবাদকে আর ‘বর্ণবাদী’ ইউরোপীয় মতাদর্শ বলা হচ্ছে না নতুন পাঠ্যপুস্তকে।
তবে পাঠ্যপুস্তকগুলোতে এখনো ইসরায়েলের দখলদারির উল্লেখ রয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রতি সৌদি আরবের প্রতিশ্রুতির ব্যাপারেও আগের মতোই জোর দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে আর ইসরায়েলকে ‘শত্রু রাষ্ট্র’ বা প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখানো হয়নি। পাঠ্যবইয়ের মানচিত্রে ‘ইসরায়েল’ নামটি উল্লেখ করা হয়নি। একইভাবে মুছে ফেলা হয়েছে ‘ফিলিস্তিন’ নামটিও। এর আগে সৌদি পাঠ্যপুস্তকগুলোর মানচিত্রে সম্পূর্ণ ফিলিস্তিনি ভূমিকে ফিলিস্তিন হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছিল।
ইমপ্যাক্ট-এসই’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, ইহুদিবিরোধিতা সম্পর্কিত অনেক কিছুই আর নেই নতুন পাঠ্যপুস্তকে। সেই সঙ্গে শাহাদত ও জিহাদের মতো ধারণাগুলো সরিয়ে তার পরিবর্তে আনা হয়েছে স্বীয় কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়াই।
টাইমস অব ইসরায়েল পত্রিকার মতে, ইসরায়েলি ইনস্টিটিউট ফর রিজিওনাল ফরেন পলিসিস মিটভিমের প্রধান নিমরোদ গোরেন সৌদি আরবের এসব পদক্ষেপকে ইসরায়েলের প্রতি অবস্থানের পরিবর্তন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি সৌদি উদ্যোগগুলোর প্রশংসা করে বলেন, এতে সহনশীলতা ও উন্মুক্ততা আরও বাড়বে।
আব্রাহাম চুক্তির অধীনে প্রায় চার বছর আগে তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিল আরব আমিরাত ও বাহরাইন। সেই মডেল উল্লেখের পর সৌদি পাঠ্যক্রমের সংশোধন ইঙ্গিত করে নিমরোদ গোরেন বলেন, ‘সৌদিরা যদি স্বাভাবিকীকরণের দিকে অগ্রসর হয়, তবে তারা এসব করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের মডেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে।’
সূত্রঃ মিডল ইস্ট মনিটর
এম.কে
০৫ জুন ২০২৪