স্কটল্যান্ডে রিফর্ম ইউকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হতে না হতেই দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে বড়সড় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ফকলির্কে দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে নাইজেল ফারাজ জানিয়ে দিলেন—“স্কটল্যান্ড আমাকে এখন আরও বেশি দেখবে।” সাম্প্রতিক সময়ে দলে ব্যাপক সমর্থন বাড়ায় তিনি এবার উত্তর সীমান্তকে বড় রাজনৈতিক ক্ষেত্র হিসেবে দেখছেন।
রিফর্ম স্কটল্যান্ডের সদস্য সংখ্যা ২০২৪ সালের জুলাইতে যেখানে ছিল মাত্র দুই হাজার, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজারে। ফকলির্কের অভিবাসন-সংকট, গ্র্যাঙ্গেমাউথের রিফাইনারি বন্ধ হওয়া এবং স্থানীয় কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়ায় রিফর্ম এই অঞ্চলকে নতুন রাজনৈতিক ঘাঁটি হিসেবে বেছে নিয়েছে।
এই বড় আয়োজনের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠেন কনজারভেটিভ পিয়ার লর্ড ম্যালকম অফোর্ড, যিনি দলত্যাগ করে রিফর্মে যোগ দিয়েছেন। কেমি বাডেনকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং ব্যবসা ও বাণিজ্য দপ্তরে জুনিয়র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অফোর্ডকে ফারাজ ঘোষণা করেন—রিফর্ম স্কটল্যান্ডের নতুন মুখ হিসেবে। এর আগে কনজারভেটিভ এমএসপি গ্রাহাম সিম্পসন ও আরও ১৯ জন স্থানীয় কাউন্সিলর রিফর্মে যোগ দিয়েছেন।
স্কটল্যান্ডে রিফর্মের সমর্থন বেড়ে উঠলেও জাতীয় পর্যায়ে সামান্য মন্দা দেখা দিয়েছে। তবুও ফারাজ আত্মবিশ্বাসী। তার ভাষায়, “এক বছরে আমরা দারুণ অগ্রগতি করেছি, সব সময় সোজা পথ নয়।”
ফকলির্কের ম্যাকডোনাল্ড ইনচিরা হোটেলের জনসমাগমে ফারাজ স্কটল্যান্ডের প্রাণস্পর্শী ইস্যুগুলো সামনে তুলে ধরেন। তিনি নেট জিরো নীতিকে ‘অর্থনৈতিক আত্মঘাতী’ বলে আখ্যা দেন এবং নর্থ সি জ্বালানি শিল্প ধ্বংস হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। মৎস্যশিল্পে নরওয়ে, আইসল্যান্ড ও ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের সফলতার উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন—“স্কটল্যান্ডও পারে।”
অভিবাসন ইস্যুতেও তিনি তীব্র অবস্থান নেন। তার অভিযোগ, এসএনপি “অবৈধ অভিবাসীদের স্বার্থকে করদাতাদের স্বার্থের উপরে রেখেছে।” স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার জন সুইনি ফারাজকে ‘উন্মাদ ও বর্ণবাদী’ মন্তব্যের জন্য কটাক্ষ করেন, যদিও ফারাজ তা হেসে উড়িয়ে দেন।
রিফর্মের নেতাদের মতে, এই প্রচারণা কেবল শুরু। মে মাসের নির্বাচনের আগে ইনভারনেস, গ্লাসগো ও নর্থ ইস্টের তেল অঞ্চলসহ স্কটল্যান্ডজুড়ে ব্যাপক প্রচারণায় নামবেন ফারাজ। দলের কাঠামো গড়ে তুলতে সাবেক টরি এমপি ড্যানি ক্রুগারকে ‘হোয়াইটহল পুনর্গঠন’ এবং প্রতিভাবান নেতৃত্ব তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দলীয় প্রচারণার ব্যস্ততার মাঝেও ফারাজের ব্যক্তিগত গতি কমছে না। দিনে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় প্রচারণায় ব্যয় করে তিনি জানিয়ে দেন—স্কটল্যান্ড এখন তার প্রধান লড়াইয়ের মঞ্চ
সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ
এম.কে

