রাজনীতির জগতে নৃশংসতা ও নির্দয়তা আর নির্মম চরিত্রের জন্য পরিচিত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত আসে এক নারীর কাছ থেকে। সহিংসতা ও নৃশংসতার রানি খ্যাত এই নারী তারই স্ত্রী সারা নেতানিয়াহু।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ-এর সিনিয়র বিশ্লেষক তাসফি বারিয়েল এ প্রসঙ্গে বলেছেন, সারা নেতানিয়াহুই এখন ইসরাইলের সিদ্ধান্ত-গ্রহণকারী কেন্দ্রগুলোর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং বর্তমান যুদ্ধে আলোচনা, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাগত নিয়োগগুলোর নিয়ন্ত্রকও এখন তিনিই।
সারার জন্ম ১৯৫৮ সালে উত্তর ইসরাইলে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সাবেক এই সদস্য বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন বলে নিজেই জানিয়েছেন।
সারা ১৯৮০ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ‘কিব্বুতস’ গ্রুপের এক ব্যক্তির স্ত্রী ছিলেন। তার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর, সারা এল আয়াল নামের এক বিমান কোম্পানিতে চাকরি নেন, বিমানবালা হিসেবে। এই বিমানেই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে এবং ১৯৯১ সালে তারা বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুটি পুত্র সন্তানও রয়েছে।
জার্মান ইন্টারনেট-ভিত্তিক দৈনিক Suddeutsche Zeitung জানিয়েছে, অন্যান্য নারীরা যেখানে তাদের ক্ষমতাধর স্বামীর পাশে আকর্ষণীয় মুচকি হাসি ও কোমলতার জন্য খ্যাত, সারা নেতানিয়াহু সেখানে এর ব্যতিক্রম। তিনি তার সহিংসতা, অভদ্রতা ও বদমেজাজের জন্যই বিখ্যাত!
নেতানিয়াহুর বাসভবনের সাবেক সেবক সিলভি জিনিসিয়া সারা নেতানিয়াহুর স্বভাব সম্পর্কে বলেছেন, তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন এবং তিনি চাইতেন আমি যেন প্রতিদিন তার পায়ে চুমু খাই!
নেতানিয়াহুর গৃহকর্মীরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সারার বিস্ফোরক আচরণ সম্পর্কে সব সময়ই অভিযোগ করে আসছেন। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন গৃহকর্মী আদালতে মামলা দায়ের করে নেতানিয়াহু পরিবারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতেও সক্ষম হয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় সর্বশেষ মামলায় ইসরাইলি বিচারকরা সারা নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক কিছু আচরণ সম্পর্কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এই আদেশ এমন সময় দেওয়া হলো, যখন সারা ও তার স্বামী নেতানিয়াহুর দুর্নীতি মামলার একজন সাক্ষীকে সারা নিজে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সূত্রঃ হারেৎজ
এম.কে
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪