কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গিয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো একটি আবেগপূর্ণ ভাষণে তার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, রবিবার রাতের খাবারের সময় তার সন্তানদের সঙ্গে এই সিদ্ধান্তটি ভাগ করে নিয়েছেন তিনি।
২০১৫ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা ট্রুডো তার জনপ্রিয়তা গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে হারিয়েছেন। কানাডা বর্তমানে একটি বড় অর্থনৈতিক ও আবাসন সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার অটোয়ার রিডু কটেজের বাইরে এক প্রেস কনফারেন্সে ট্রুডো বলেন:
“প্রতিদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জেগে উঠলে আমি কানাডিয়ানদের সহনশীলতা, উদারতা ও সংকল্প দ্বারা অনুপ্রাণিত হই।
২০১৫ সাল থেকে, আমি এই দেশের জন্য লড়েছি, আপনাদের জন্য লড়েছি। মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করার জন্য।
মহামারির মধ্য দিয়ে আমরা একে অপরকে সমর্থন করেছি, পুনর্মিলনকে অগ্রসর করেছি। এই দেশের জন্য মুক্ত বাণিজ্য রক্ষা করেছি। ইউক্রেন এবং আমাদের গণতন্ত্রের পাশে দাঁড়িয়েছি।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি এবং আমাদের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা এখন বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আছি।”
৫৩ বছর বয়সী ট্রুডো বলেন, তিনি রবিবার তার পরিবারের সঙ্গে রাতের খাবারের সময় এই সিদ্ধান্তটি জানিয়েছেন।
“আপনারা সবাই জানেন, আমি একজন যোদ্ধা। আমার শরীরের প্রতিটি অংশ আমাকে লড়াই করতে বলে, কারণ আমি কানাডিয়ানদের গভীরভাবে ভালোবাসি।
আমি এই দেশকে গভীরভাবে ভালোবাসি এবং আমি সবসময়ই কানাডিয়ানদের সর্বোত্তম স্বার্থে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ থাকব।”
নতুন নেতা নির্বাচনের আগে দায়িত্বে থাকবেন
ট্রুডো বলেন, নতুন নেতা নির্বাচনের জন্য “একটি শক্তিশালী এবং জাতীয় প্রক্রিয়া”র মধ্য দিয়ে যাওয়া হবে। আমি দলীয় নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করার ইচ্ছা পোষণ করছি।”
কানাডার সংসদ মার্চ ২৪ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে, যাতে নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়। তিনি বলেন, “ আজ সকালে, আমি গভর্নর জেনারেলকে পরামর্শ দিয়েছি যে আমাদের একটি নতুন সংসদ অধিবেশন প্রয়োজন। তিনি এই অনুরোধ মঞ্জুর করেছেন”
ট্রুডো তার দলের সদস্যদের এবং সাধারণ কানাডিয়ানদের কাছ থেকে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে ছিলেন, কারণ দেশটি অত্যধিক মুদ্রাস্ফীতি এবং চরম হাউজিং সংকটের সম্মুখীন।
তার অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের আকস্মিক পদত্যাগ (১৬ ডিসেম্বর) ট্রুডোর নেতৃত্বকে আরো চাপের মধ্যে ফেলে দেয়।
সাম্প্রতিক ইপসোস জরিপে দেখা গেছে ৭৩% কানাডিয়ান, যার মধ্যে ৪৩% লিবারেল ভোটার, মনে করেন ট্রুডোকে তার দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত।
ট্রুডোর পদত্যাগের ফলে ২০১৩ সালে লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে তার যাত্রার সমাপ্তি ঘটবে। তার নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি ২০১৫, ২০১৯, এবং ২০২১ সালে তিনটি টানা নির্বাচন জিতেছিল।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
০৬ জানুয়ারি ২০২৫