পৃথিবীর চৌম্বক মেরু পরিবর্তনের গতি বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, এই রূপান্তর একসময় এমন এক অবস্থায় পৌঁছাতে পারে, যখন সূর্য পশ্চিম আকাশে উদিত হবে। ইসলামের হাদিসে বহু পূর্বেই এ ঘটনাকে কেয়ামতের অন্যতম আলামত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
হাজার বছর ধরে মানুষ পূর্ব আকাশে সূর্যের উদয় এবং পশ্চিমে অস্ত দেখছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানী ড্যান লেথ্রপের সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলের ঘূর্ণন সাময়িকভাবে থেমে গিয়ে উল্টো দিকে ঘুরতে শুরু করার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর ও দক্ষিণ চৌম্বক মেরু ইতিহাসের মতো আবারও স্থান বদল করতে পারে।
প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার বছর আগে সর্বশেষ এমন পরিবর্তন ঘটেছিল, যা “ব্রুনস-মাতোয়ামা বিপরীতকরণ” নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীদের মতে, এখন সেই পরিবর্তনের পূর্বাভাস আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। পৃথিবীর অভ্যন্তরে গলিত লোহার প্রবাহ থেকে তৈরি হওয়া চৌম্বক বলয় দুর্বল হতে শুরু করেছে, যা মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে পৃথিবীর ওপর।
চৌম্বক মেরু উল্টে গেলে পৃথিবীর সুরক্ষা বলয় ভেঙে পড়তে পারে। এর ফলে সূর্যের রেডিয়েশন সরাসরি পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে, জিপিএস ও স্যাটেলাইট ব্যবস্থায় বিপর্যয় ঘটতে পারে, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও নেটওয়ার্ক ধসে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, পাখি, কচ্ছপসহ অভিবাসী প্রাণীরা দিক নির্ধারণের ক্ষমতা হারাতে পারে।
ধর্মীয় দিক থেকেও বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সহিহ হাদিসে সতর্ক করে বলেছেন, “যতদিন না পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবে, ততদিন কেয়ামত হবে না। আর যখন তা ঘটবে, তখন সকলেই ঈমান আনবে; কিন্তু সেই ঈমান তখন আর গ্রহণযোগ্য হবে না।” (সহিহ বুখারি)
বিজ্ঞানীরা যদিও বলছেন, পৃথিবীর ঘূর্ণন হঠাৎ উল্টে যাবে—এমন কোনও আশঙ্কা এখনই নেই, তবে তারা সতর্ক করেছেন যে চৌম্বক মেরুর পরিবর্তন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া যদি ত্বরান্বিত হয় এবং মানবজাতি প্রস্তুত না থাকে, তবে তা এক ভয়াবহ বৈশ্বিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আজকের বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণ ও ইসলামের ভবিষ্যদ্বাণী যেন একই সুতায় বাঁধা পড়ছে। পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয়ের সম্ভাবনা হয়তো দূরের বাস্তবতা, কিন্তু বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন—এটি আর নিছক কল্পকাহিনি নয়, বরং সময়ের অপেক্ষা।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫