বিভিন্ন কারণে পাসপোর্টে দেয়া বয়সের তথ্য পরিবর্তন করতে চান ইতালিতে আসা অনিয়মিত বাংলাদেশিরা৷ সেই সুযোগ না পাওয়ায় বসবাসের বৈধতা ও কাজের সুযোগ কোনটাই মিলছে না তাদের৷
সিসিলির কাম্পোবেলো ডি মাজারার একটি শরণার্থী ক্যাম্পে থাকেন কয়েকজন বাংলাদেশি৷ তাদের একজন মো. সজীব হোসেন, বছরখানেক আগে দ্বীপটিতে এসে পৌঁছান৷
বাংলাদেশ থেকে প্রথমে তিনি আসেন দুবাই৷ সেখানে এক সপ্তাহ থেকে চলে যান লিবিয়ায়৷ উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে তিনি দুই মাস কাজ করেন বিনা বেতনে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি দুই মাস ছিলাম, আমাকে কোনো টাকা পয়সা দেয় নাই৷ আমাকে মেরে ফেলে রেখে যায় ওরা৷ পরে সেখানে বাঙ্গালিরা আমাকে সুস্থ করে তোলে৷ পরে বাড়ি থেকে টাকা এনে আমি সাগরপথে ইতালি আসি৷’’
বিপজ্জনক এই যাত্রায় প্রায় দশ লাখ টাকার মতো খরচ করে সজীব এখন আটকে আছেন শরণার্থী ক্যাম্পে৷ অনিয়মিত পথে আসা এই বাংলাদেশি দেশটিতে আশ্রয় আবেদনও করতে পারছেন না৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আসার পথে পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছি৷ এখানকার কর্তৃপক্ষ আমার কাছে পাসপোর্ট চাইছে৷ কিন্তু আমি কোথা থেকে দিব? বাংলাদেশ দূতাবাস আমাদের পাসপোর্ট দিচ্ছে না৷’’
সজীব জানান, তার পাসপোর্টের সঙ্গে জন্ম নিবন্ধনের বয়সের পাঁচ বছরের বেশি গরমিল৷ এখন তিনি বয়স কমিয়ে প্রকৃত বয়স দেখিয়ে পাসপোর্ট করতে চান৷ কিন্তু সেই সুযোগ পাচ্ছেন না৷
শুধু সজীব নন, ইতালিতে এখন এমন সমস্যায় অনেক অনিয়মিত বাংলাদেশি৷
কাম্পোবেলো ডি মাজারায় শরণার্থী ক্যাম্পের আরেক বাসিন্দা মামুন বলেন, ‘‘আমরা কাজ করতে গেলে ডকুমেন্ট লাগে৷ আমাদের কাছে পাসপোর্ট চাইছে কিন্তু পাসপোর্ট দিতে পারছি না৷’’ এই অভিবাসীর পাসপোর্টে বয়সের গরমিল ১১ বছরের৷ তিনি জানান, ১৬-১৭ বছর বয়সে তিনি কাজের জন্য সৌদি আরবে যেতে বয়স বেশি দেখিয়ে দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করেছিলেন৷ সৌদি আরব যেতে না পেরে একসময় তিনি লিবিয়া হয়ে ইতালি পাড়ি জমান৷ এখন প্রকৃত বয়সের তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট করতে চাইলেও তিনি সেটা করতে পারছেন না৷”
বাংলাদেশ থেকে আনা জন্মসনদে উল্লেখিত বয়স দিয়ে নতুন পাসপোর্ট দেওয়ার দাবিতে সম্প্রতি ইটালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভও করেছেন প্রবাসীরা৷
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস, ডয়চে ভেলে