যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র র্যান্ডি ফাইন ফিলিস্তিনি জনগণকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। কংগ্রেসের সাম্প্রতিক এক শুনানিতে তিনি প্রকাশ্যে বলেন, এ ধরনের মন্তব্যের জন্য তাকে ইসলামবিদ্বেষী বলা হলেও তিনি তাতে বিচলিত নন।
ফ্লোরিডার রিপাবলিকান এই কংগ্রেসম্যান বহুদিন ধরেই ইসলামবিদ্বেষী ও ফিলিস্তিনবিরোধী বক্তব্যের জন্য পরিচিত। ওই দিনের শুনানিতে ফাইন অভিযোগ করেন যে, পশ্চিম তীরের কিছু এলাকায় ‘বর্ণবৈষম্যমূলক নিষেধাজ্ঞার’ কারণে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা যেতে পারেন না। তবে বাস্তবে নিরাপত্তার স্বার্থে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকেই এসব এলাকায় সতর্কবার্তা টানিয়ে রাখা হয়, যেখানে ফিলিস্তিনি শহরগুলোতে ইহুদিদের প্রবেশ না করার নির্দেশ থাকে। অধিকৃত এ ভূখণ্ডের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলি সেনাদের হাতেই।
এর বিপরীতে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর সুরক্ষায় থাকা অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরাই নিয়মিত ফিলিস্তিনি গ্রাম দখল, লুটপাট ও হামলা চালিয়ে থাকে। চলতি বছর অন্তত দুইজন মার্কিন নাগরিকও এসব বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় নিহত হয়েছেন।
শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জায়নবাদী সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মর্টন ক্লেইন। তাকে প্রশ্ন করতে গিয়ে ফাইন বলেন, ‘যারা প্রতিনিয়ত ইসরায়েলের ধ্বংস কামনা করে, যেখানে “ইহুদিরা এখানে প্রবেশ করতে পারবে না” বা “আমরা ইহুদিমুক্ত হতে চাই”—এমন সাইন দেখা যায়, তাদের সঙ্গে কীভাবে শান্তি স্থাপন সম্ভব?’
ক্লেইন উত্তরে দাবি করেন, ইসলামের ‘সংস্কার’ প্রয়োজন এবং মুসলমানদের ইসরায়েলকে একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নিতে হবে। তবে ইসলামবিদ্বেষী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার ভয়ে অনেকেই এই কথা বলতে চান না।
এ সময় ক্লেইনের কথা থামিয়ে ফাইন বলেন, তিনি কোনো ধরনের অভিযোগ বা সমালোচনাকে ভয় পান না। এরপর আরও একধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা আপনার ধ্বংস কামনা করে, তাদের সঙ্গে কীভাবে শান্তিতে আসা যায়—আমি জানি না। আমার মনে হয়, আপনি আগে তাদের নিশ্চিহ্ন করুন।’
ফাইনের এ বক্তব্যকে মানবাধিকারবিদ, নীতিনির্ধারক ও বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষক গণহত্যার প্রতি উস্কানি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন রাজনীতিতেও নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
সূত্রঃ ফক্স নিউজ
এম.কে

