মোবাইল ফোন চুরি ঠেকাতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সহযোগিতা চেয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না অ্যাপল ও গুগল—এমন অভিযোগ উঠেছে ব্রিটিশ সংসদীয় কমিটিতে।
বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত কমিটিতে পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, লন্ডনে দুই-তৃতীয়াংশ চুরির ঘটনায় মোবাইল ফোন জড়িত। ছুরি-সংশ্লিষ্ট অপরাধের প্রায় ৭০ শতাংশই ঘটে ছিনতাইয়ের সময়, আর এর মূলে রয়েছে স্মার্টফোন চুরি।
মেট পুলিশ চাইছে, ফোন নির্মাতারা যেন ফোনের আলাদা শনাক্তকারী নম্বর (আইএমইআই) ব্যবহার করে চুরি হওয়া ফোনগুলো সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর করে দেয়।
তবে অ্যাপলের নিরাপত্তা প্রধান গ্যারি ডেভিস সংসদীয় কমিটিকে জানান, আইএমইআই নম্বরের ভিত্তিতে ব্লক করলে প্রতারণার ঝুঁকি বাড়বে।
ডেভিস বলেন, “প্রতিমাসে হাজারের বেশি লোক ফোনে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এসবের পেছনে থাকে হুমকি, ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির মতো উদ্দেশ্য।”
অ্যাপল ও গুগল বলছে, তারা ইতিমধ্যে নতুন সুরক্ষা ব্যবস্থা এনেছে—অ্যাপলের চুরি প্রতিরোধ সুরক্ষা ও অ্যান্ড্রয়েডের চুরি শনাক্তকরণ তালা।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, চুরি হওয়া ফোনের ৭৫ শতাংশ দেশের বাইরে পাচার হয়, যার মধ্যে ২৮ শতাংশ যায় চীন ও হংকংয়ে। পুলিশ দাবি করেছে, ফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো চাইলে আগামীকাল থেকেই আইএমইআই ব্ল্যাকলিস্টভুক্ত ফোনগুলোকে ক্লাউড সেবা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে।
সংসদ সদস্যদের অভিযোগ, অ্যাপল ও গুগল ইচ্ছা করেই সময়ক্ষেপণ করছে।
অ্যাপলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, চোরেরা এখন ফোন ভেঙে যন্ত্রাংশ বিক্রি করছে, আর অ্যাক্টিভেশন তালা প্রযুক্তি দিয়ে তারা সেই বাজার বন্ধ করার চেষ্টা করছে। তবে কমিটির মতে, আইএমইআই বন্ধের মতো কার্যকরী পদক্ষেপ ছাড়া ফোন চুরি ঠেকানো সম্ভব নয়।
অ্যাপল জানিয়েছে, তারা পুলিশকে তথ্য দিতে প্রস্তুত, তবে পুলিশের পক্ষ থেকেও চুরি সংক্রান্ত অনুরোধ কম আসছে বলে দাবি তাদের।
এদিকে সংসদীয় কমিটি বলছে, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়—ফলে স্মার্টফোন চুরি রোধে এখনই আরও জোরালো ও একতাবদ্ধ উদ্যোগ প্রয়োজন।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
০৫ জুন ২০২৫