দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং তার স্ত্রী আফরোজা বেগমের সম্পদের বিস্তারিত হিসাব চেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ‘অর্থ আত্মসাৎ, অর্থপাচার এবং জোরপূর্বক জমি দখলসহ’ নানা অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(১) ধারা অনুযায়ী তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়েছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, আহমেদ আকবর সোবহানের দেশে ৬৭.৫০ কোটি টাকার স্থাবর এবং ১৮৪.৭১ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তার মোট সম্পদ ২৫২.২১ কোটি টাকা। তার স্ত্রী আফরোজা বেগমের স্থাবর সম্পদ ১১৭.৯৫ কোটি টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ৩৩৫.১৬ কোটি টাকা, মোট ৪৫৩.১২ কোটি টাকা।
দুদকের অভিযোগ, তারা যৌথভাবে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার পাচার করে ওই দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন। এছাড়া সুইজারল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড ও আইল অফ ম্যানে নিবন্ধিত কোম্পানির ব্যাংক হিসাব খুলে বিপুল অর্থ পাচার করেছেন।
দুদক বলেছে, আহমেদ আকবর সোবহান ও তার স্ত্রী দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা অর্জন করেছেন, যা তাদের আয়ের উৎসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তারা বাংলাদেশের অনুমোদন না নিয়ে বিদেশে অর্থ স্থানান্তর করেছেন।
এই অনুসন্ধান অংশ হিসেবে দুদক তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও তলব করেছে। এছাড়া বসুন্ধরা চেয়ারম্যান ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি, জমি দখল, ঋণের অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে।
গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর সাবেক সরকারের সুবিধাভোগী বড় ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। এর মধ্যে এনবিআর, বিএফআইইউ ও সিআইডি বসুন্ধরা গ্রুপসহ কয়েকটি বড় কোম্পানির মালিকদের লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, এই বছরের জুনে গ্রুপের দুই ছেলে যুক্তরাজ্যে পাচার করা সম্পদের তথ্য দিতে চিঠি প্রেরণের কথা বলেছেন। এই অনুসন্ধান চলমান রয়েছে এবং সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এম.কে
১৭ আগস্ট ২০২৫