যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আবেদনকারী বাংলাদেশিদের জন্য আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন। শিগগিরই বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মীদের জন্য চালু হতে যাচ্ছে ই-ভিসা পদ্ধতি, যা হবে পুরোপুরি কাগজবিহীন, অনলাইনভিত্তিক ও ডিজিটাল। ১৫ জুলাই পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য এই সুবিধা চালুর পর, বাংলাদেশের নামও যুক্তরাজ্য সরকারের আলোচনায় এসেছে।
যুক্তরাজ্য সরকার ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ প্রায় সব ভিসা ক্যাটাগরিতে ফিজিক্যাল স্টিকার বা ভিনিয়েট বাতিল করে ডিজিটাল সিস্টেমে রূপান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে আবেদনকারীর অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষিত থাকবে একটি নিরাপদ অনলাইন ইউকে ভিসা অ্যান্ড ইমিগ্রেশন (UKVI) অ্যাকাউন্টে। পাসপোর্টে আর কোনো স্টিকার লাগানো হবে না, যা এ পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।
যদিও এখনো বাংলাদেশিদের জন্য ই-ভিসা চালুর নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি, তবে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ও স্কিলড ওয়ার্কার থাকার কারণে এই পরিবর্তনে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ই-ভিসা চালুর ফলে আবেদন প্রক্রিয়া আরও সুশৃঙ্খল, নিরাপদ ও ব্যবহারবান্ধব হবে। আবেদনকারীরা তাদের ভিসা স্ট্যাটাস সহজেই অনলাইনে যাচাই ও তৃতীয় পক্ষকে প্রদর্শন করতে পারবেন।
লন্ডনের একজন আইন বিশেষজ্ঞ জানান, ই-ভিসা চালুর ফলে শিক্ষার্থী ও কর্মীরা তাদের অভিবাসন অবস্থা প্রমাণে ডিজিটাল সুবিধা পাবেন এবং পাসপোর্ট নিজের কাছেই রাখতে পারবেন, যা পূর্বের স্টিকার-নির্ভর পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি সুবিধাজনক।
ই-ভিসা ব্যবস্থায় নিয়োগদাতা, বাড়িওয়ালা বা ভ্রমণ নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের নিকট পরিচয় যাচাই আরও সহজ ও নির্ভরযোগ্য হবে। ‘ভিউ অ্যান্ড প্রুভ’ সেবার মাধ্যমে ব্যবহারকারী চাইলে নিজের ভিসা স্ট্যাটাস তৃতীয় পক্ষকে অনলাইনে দেখাতে পারবেন।
পাকিস্তানে ইতিমধ্যেই শিক্ষার্থী ভিসা, স্বল্পমেয়াদি কোর্স, স্কিলড ওয়ার্কার, গ্লোবাল ট্যালেন্ট, ইয়ুথ মোবিলিটি স্কিম ও ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টসপারসন ভিসাসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ই-ভিসা কার্যকর হয়েছে। সেখানে আবেদনকারীরা আর কোনো ফিজিক্যাল স্টিকার পাচ্ছেন না।
তবে নির্ভরশীল ভিসা, জেনারেল ভিজিটর এবং কিছু ভিন্ন ধরনের স্বল্পমেয়াদি ভিসার ক্ষেত্রে এখনও স্টিকার ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশেও এ ধরনের ভিসাগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পৃথক হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বাংলাদেশি আবেদনকারীদের যুক্তরাজ্য সরকারের ওয়েবসাইট ও অফিসিয়াল চ্যানেল নিয়মিত পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিয়েছেন। ই-ভিসা চালুর পর আবেদন ফর্ম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রবেশ সংক্রান্ত নিয়মাবলি কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।
বাংলাদেশিদের জন্য এই ডিজিটাল অভিবাসন যুগের সূচনা শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই নয়, বরং এটি যুক্তরাজ্যে আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ, স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী করে তুলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
১৬ জুলাই ২০২৫