বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পরে, ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাপান। বাংলাদেশের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুস সামাদ আজাদকে লেখা চিঠিতে জাপানের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুকুদা জাপানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি কামনা এবং দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার আগ্রহ পোষণ করেন। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজাদ মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনর্গঠনে তাঁর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন। এ জন্য জাপানের সহযোগিতা চান। উভয় দেশ তাদের সেসব আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছে। জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতা এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী।
জাপান-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। জাইকার বড় পরিসরের অবকাঠামো প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেবে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ-বি) ইনিশিয়েটিভকে। এটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা এবং জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০১৪ সালে শুরু করেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করে।এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আড়াই হাজার উপজেলায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বিদেশি বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।
জাপান বাংলাদেশ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষরের জন্য করণীয় ঠিক করতে সরকারি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট বিশেষদের নিয়ে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করছে জাপান। গত ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ইংরেজি রোববার বানিজ্যমন্ত্রীর সাথে বৈঠককালীন সময়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি বলেন জাপান ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, সে মোতাবেক কাজ চলছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা সফর বিনিময় করলে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত সহজ হবে বলেও জানান তিনি।
২০২৬ সালে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বিভিন্ন দেশ থেকে বাণিজ্য সুবিধা পেতে পিটিএ বা এফটিএর মতো চুক্তি করতে বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর এফটিএ বা পিটিএর মতো বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তি করে জাপানের সঙ্গে ব্যবসা, বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করা হবে। জাপান ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর জাপান বাংলাদেশের পাশে থাকবে।এতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক শক্ত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এম.কে
০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ইংরেজি