25.3 C
London
June 25, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

বিদেশি কর্মীদের উপর নির্ভরশীল নিয়োগদাতাদের উপর কড়া ভিসা বিধিনিষেধ আসছে যুক্তরাজ্যে

যুক্তরাজ্যে বিদেশ থেকে প্রকৌশলী, আইটি কর্মী ও টেলিকমিউনিকেশন স্টাফ নিয়োগ দিতে আগ্রহী নিয়োগদাতাদের এখন প্রমাণ করতে হবে যে তারা দেশের অভ্যন্তরে কর্মী প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ করছে — যুক্তরাজ্যে নিট অভিবাসন কমাতে সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই শর্ত আরোপ করা হচ্ছে।

আগামী সপ্তাহের শুরুতে প্রকাশিতব্য একটি সরকারি হোয়াইট পেপারে এমন কিছু খাতের ওপর নতুন শর্ত আরোপের কথা উল্লেখ থাকবে বলে জানা যায়।

এসব কোম্পানিকে দেখাতে হবে যে তারা প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ করছে — উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষানবীশ (apprenticeship) সংখ্যা বাড়ানো — যাতে তারা বিদেশি কর্মী রাখার অনুমতি পায়।

এই হোয়াইট পেপারের উদ্দেশ্য হলো রেকর্ড পরিমাণ অভিবাসন মোকাবেলা করা, যা গত সরকারের আমলে বছরে ৯ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এখন চাপের মুখে আছেন অভিবাসনের সংখ্যা কমানোর বিষয়ে, সম্প্রতি স্থানীয় নির্বাচনে নাইজেল ফারাজের রিফর্ম পার্টির সাফল্য তাকে চাপে ফেলেছে।

স্বরাষ্ট্রসচিব ইভেট কুপার গত বছর প্রযুক্তি ও প্রকৌশল কোম্পানিগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যালোচনার জন্য নির্দেশ দেন, যাতে তাদের দক্ষ কর্মী ভিসার উপর নির্ভরতা মূল্যায়ন করা যায়।

মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি কমিটিকে বলা হয়েছিল, তারা যেন খুঁজে বের করে কেন এই খাতগুলো আন্তর্জাতিক নিয়োগের উপর নির্ভর করছে এবং প্রশিক্ষণ, বেতন ও কাজের পরিবেশ এই ঘাটতির পেছনে কতটা দায়ী। কমিটিকে ৬ মে’র মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

সরকারি সূত্রগুলো জানায়, হোয়াইট পেপারে অভিবাসীদের জন্য ইংরেজি ভাষার উচ্চতর দক্ষতা বাধ্যতামূলক আপাতত করা হচ্ছে না।

তারা বলেছে, যুক্তরাজ্যে কাজের জন্য আসা বিদেশিদের জন্য ‘B2’ নামের কঠিনতর ভাষা পরীক্ষার কোনো পরিকল্পনা নেই।

কুপার টোরিদের আগের নীতির থেকে সরে আসতে যাচ্ছেন, যেখানে মূলত স্বল্প-দক্ষতা সম্পন্ন কর্মী যেমন কেয়ার ও স্বাস্থ্য খাতে নিয়োগের উপর বিধিনিষেধ ছিল। তিনি এখন তুলনামূলকভাবে উচ্চ বেতনের, উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন খাতগুলো পর্যালোচনা করছেন।

পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের আমলে তার কনজারভেটিভ সরকার দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য ন্যূনতম বেতন ২৬,২০০ পাউন্ড থেকে বাড়িয়ে ৩৮,৭০০ পাউন্ড করে এবং কেয়ার কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

বর্তমানে সরকারি সূত্র জানিয়েছে, নির্দিষ্ট কিছু দেশের নাগরিকদের জন্য অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।

গত মার্চে হোম অফিসের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যেসব আশ্রয়প্রার্থীরা ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে অবশেষে এসাইলাম আবেদনে চলে যায়, সেই প্রধান দেশ হিসাবে পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও শ্রীলঙ্কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তারা ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির সঙ্গে মিলে এমন একটি ডেটাবেস তৈরি করছেন, যেখানে আশ্রয় চাওয়া সবচেয়ে বেশি দেশ থেকে আসা আবেদনকারীদের তথ্য থাকবে।

গত বছর কাজ বা পড়াশোনার ভিসায় যুক্তরাজ্যে আসা প্রায় ১০,০০০ আশ্রয়প্রার্থী কোনো এক সময় করদাতাদের অর্থে পরিচালিত হোটেল বা সরকারি আশ্রয়ে ছিলেন।

তবে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, সরকার আদৌ এ ধরনের ডেটাবেস তৈরি করতে পারবে কিনা এবং এটি “ইচ্ছাকৃতভাবে পক্ষপাতদুষ্ট” ফলাফলের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
০৯ মে ২০২৫

আরো পড়ুন

রমজানে ব্রিটেনে সেহরি ও ইফতারের সময়সূচী

অনলাইন ডেস্ক

লন্ডনে জনসমাবেশ থামাতে গিয়ে পুলিশ আহত

ডাক্তার সংকটে হিমশিম খাচ্ছে ব্রিটেন