বিলেতে প্রপার্টি ক্রয় করে/পরিবর্তন করে বাই টু লেট প্রপার্টি হিসেবে ভাড়া দেয়া একটি লাভজনক বিনিয়োগ। এই ধরনের প্রপার্টিকে বলা হয় বাই টু লেট প্রপার্টি এবং যিনি এই প্রপার্টি ক্রয় ও ভাড়া দেন তাকে বলা হয় বাই টু লেট ল্যান্ডলর্ড। বিলেতে বাই টু লেট প্রপার্টিতে বিনিয়োগ এবং ল্যান্ডলর্ড সংখ্যা প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিলেতে যেসব ল্যান্ডলর্ডের এক থেকে তিনটি বাই টু লেট প্রপার্টি আছে, তাদেরকে এ্যামাচার ল্যান্ডলর্ড বলে। আইন অনুযায়ী এ্যামাচার ল্যান্ডলর্ডদের বলা হয় নন-পোর্টফলিও ল্যান্ডলর্ড এবং অন্যদিকে যেসব ল্যান্ডলর্ড চার বা চার এর অধিক বাই টু লেট প্রপার্টি আছে তাদেরকে বলা হয় পোর্টফলিও ল্যান্ডলর্ড। একটি জরিপ অনুযায়ী বিলেতে মোট বাই টু লেট ল্যান্ডলর্ডদের মধ্যে ১৫% হল এ্যামাচার ল্যান্ডলর্ড।
বিলেতে এ্যামাচার ল্যান্ডলর্ড ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে
বিলেতে প্রপার্টি সেক্টরে ৫.৬ মিলিয়ন ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রপার্টি রয়েছে। ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত ’ইংলিশ হাউজিং সার্ভে ২০২০-২১’ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ইংল্যান্ডে মোট ৪.৪ মিলিয়ন হাউসহোল্ড ব্যক্তি মালিকানাধীন বাই টু লেট প্রপার্টিতে বসবাস করে, যা ইংল্যান্ডের মোট হাউসহোল্ড এর এক পঞ্চমাংশ এবং ইংল্যান্ডে বাই টু লেট প্রপার্টির ২০% ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রপার্টি। উত্তরাধিকারসূত্রে, কর্মস্থান পরিবর্তন, অর্থনৈতিক ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে কোন ব্যক্তি যদি হঠাৎ করে কোন বাই টু লেট প্রপার্টির মালিক হয়ে যান তবে তাকে অ্যাক্সিডেন্টাল ল্যান্ডলর্ড বলে। একটি এস্টেট এজেন্ট কোম্পানির জরিপ অনুযায়ী বর্তমানে গ্রেট ব্রিটেন এর মোট বাই টু লেট প্রপার্টির ৩০% প্রপার্টির মালিক হল এক্সিডেন্টাল ল্যান্ডলর্ড ।
প্রপার্টি মার্কেটের বিভিন্ন পরিবর্তন, আইনগত বিভিন্ন ধারার পরিবর্তন, রেন্টাল প্রপার্টি পরিচালনা ব্যয়, ইনফ্লেশন ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে বিলেতে এ্যামাচার ল্যান্ডলর্ড ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে এবং অন্যদিকে পোর্টফলিও ল্যান্ডলর্ড এর সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিলেতে ২.৭ মিলিয়ন এ্যামাচার ল্যান্ডলর্ড রয়েছে, যারা গড়ে ২টি প্রপার্টির মালিক। এখন এই এ্যামাচার ল্যান্ডলর্ডরা প্রপার্টি সেক্টর থেকে চলে গেলে প্রপার্টি সেক্টরের ২২৪ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতি হবে। প্রপার্টির মূল্য কমে যাবে এবং রেন্ট বৃদ্ধি পাবে।
বিলেতে বাই টু লেট প্রপার্টি ক্রয় করার পর এ্যামাচার ল্যান্ডলর্ডরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। তাই প্রপার্টি ক্রয় করার পর এ্যামাচার ল্যান্ডলর্ডদের যেসব বিষয় এর প্রতি অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবেঃ
প্রপার্টি সংস্কারঃ প্রপার্টি ক্রয় করার পর প্রপার্টি সংস্কার কারার জন্য আপনার বাজেট নির্ধারণ করুন এবং উত্তম পরিকল্পনা করুন । এরপর আপনার নতুন ক্রয়কৃত প্রপার্টিতে সাধারণ সংস্কার করুন। যেমন- ইউটিলিটি লাইন, দরজা ও জানালা মেরামত, রং করা ইত্যাদি। কোন রুম বর্ধিত/নতুন রুম করতে চাইলে কোন অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার এর সাথে যোগাযোগ করে একটি নকশা/প্লান তৈরি করে নিন এবং এই প্লানটির জন্য লোকাল প্ল্যানিং অথরিটি এবং লোকাল কাউন্সিল এর মাধ্যমে অনুমতি নিতে হবে।
প্রপার্টি ব্যবস্থাপনাঃ একজন ল্যান্ডলর্ড ব্যক্তিগতভাবে প্রপার্টি ব্যবস্থাপনা করতে পারেন। যেমনঃ রেন্ট সংগ্রহ, প্রপার্টি মেরামত, ইউটিলিটি লাইন ইত্যাদি। অথবা কোন টেন্যান্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি এর মাধ্যমে প্রপার্টি ব্যবস্থাপনা করতে পারেন। তবে মর্গেজ নিয়ে প্রপার্টি ক্রয় করলে টেন্যান্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ করার পূর্বে প্রপার্টির মাসিক রেন্ট, মাসিক মর্গেজ পেমেন্ট, মাসিক এজেন্সি ফি ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে নিতে হবে।
প্রপার্টি রি-মর্গেজঃ প্রপার্টি ক্রয় করা হল এক ধরণের বিনিয়োগ। প্রপার্টি ক্রয় করার ২ বছর বা ৫ বছর পর প্রপার্টির মূল্য বৃদ্ধি পেলে। প্রপার্টি রি-মর্গেজ করে, রি-মর্গেজ এর টাকা ডিপোজিট হিসেবে ব্যবহার করে আরেকটি বাই টু লেট প্রপার্টি ক্রয় করা যাবে।
রেন্ট গ্যারান্টি ইনস্যুরেন্সঃ ল্যান্ডলর্ডগণ ল্যান্ডলর্ড লিগ্যাল প্রটেকশন ও রেন্ট গ্যারান্টি ইনস্যুরেন্স করতে পারেন। ট্যানেণ্টদের সাথে ল্যান্ডলর্ড এর কোন সমস্যা এবং চুক্তি ভঙ্গের কারণে ল্যান্ডলর্ডদের লিগ্যাল সাপোর্ট এর প্রয়োজন হলে ল্যান্ডলর্ড লিগ্যাল প্রটেকশন এর মাধ্যমে লিগ্যাল কভার পাওয়া যাবে। অন্যদিকে লিগ্যাল ডিসপিউট এর কারণে ট্যানেণ্ট রেন্ট না দিলে। রেন্ট গ্যারান্টি কভার এর আওতায় নির্দিষ্ট মাস পর্যন্ত প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট এ্যামান্ট পাওয়া যাবে।
ল্যান্ডলর্ড ট্যাক্সঃ বাই টু লেট প্রপার্টি ক্রয় করার পর প্রতিবছর একজন ল্যান্ডলর্ডকে বাৎসরিক ভাড়া এবং তার অন্যান্য ইনকামের উপর ট্যাক্স দিতে হবে। প্রতি বছর HMRC থেকে এসএ৩০২ (SA302) এবং ট্যাক্স ইয়ার ওভারভিউ সংগ্রহ করতে হবে।
প্রপার্টি লাইসেন্স: বাই টু লেট প্রপার্টির জন্য ল্যান্ডলর্ড লাইসেন্স/ প্রপার্টি লাইসেন্স সংগ্রহ করুন।
কনসেন্ট টু লেট : আপনার মর্গেজ এডভাইজর এর পরামর্শক্রমে আপনার মর্গেজ ল্যান্ডর এর নিকট হতে ‘কনসেন্ট টু লেট’ নিতে হবে। ‘Consent to Let’ এর মাধ্যমে আপনার বর্তমান মর্গেজ অপরিবর্তিত রেখে প্রপার্টি ভাড়া দিতে পারবেন অথবা বর্তমান রেসিডেন্সিয়াল মর্গেজকে বাই টু লেট মর্গেজে পরিবর্তিত করতে পারবেন অথবা আপনার প্রপার্টির জন্য রি- মর্গেজ /লেট টু বাই মর্গেজ করতে পারবেন।
এনার্জি এফিসিয়েন্ট সার্টিফিকেট (EPC): EPC সার্টিফিকেট দ্বারা আপনার প্রপার্টিতে কি পরিমাণ এনার্জি খরচ হয় এবং আপনার প্রপার্টি কতটা এনার্জি এফিসিয়েন্ট তার বিস্তারিত রিপোর্ট পাবেন। আপনার প্রপার্টিকে A থেকে G এর মধ্যে একটি রেটিং করা হবে। আপনার EPC সার্টিফিকেট এর মেয়াদ ১০ বছর পর্যন্ত থাকবে। নতুন প্রপার্টি ক্রয়, বিক্রয় এবং ভাড়া দেয়ার জন্য নুন্যতম E রেটিং এর EPC সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হবে। আপনার প্রপার্টির Energy Performance Certificate (EPC) এর জন্য আপনার নিকটস্থ Domestic Energy Assessor এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
সেফটি এবং সার্টিফিকেটঃ প্রপার্টি ভাড়া দেবার আগে সঠিকভাবে গ্যাস, ইলেক্ট্রিসিটি এবং ফায়ার সেফটি এসেসমেণ্ট করান এবং যথাযথ ডকুমেন্ট সংগ্রহ করুন।
টেন্যান্সি সমাপ্ত করাঃ কোন কারণে যদি আপনার বাই টু লেট প্রপার্টির টেন্যান্সি সমাপ্ত করতে চান, আইন অনুযায়ী আপনাকে তা করতে হবে। হাউসিং আইন ১৯৮৮ অনুযায়ী একজন ল্যান্ডলর্ড হাউসিং আইন ১৯৮৮ এর সেকশন ৮ এবং ২১ নোটিশ এর মাধ্যমে টেন্যান্সি সমাপ্ত করতে পারবেন।
প্রপার্টি মার্কেট এবং মর্গেজ সংক্রান্ত যেকোন ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে নিচের ইমেইল অথবা টেলিফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা যাবে।
EMAIL: info@benecofinance.co.uk
PHONE: +4402080502478